নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে (suvendu) আসন্ন উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। এই নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র প্রার্থী শ্রী আশীষ ঘোষের সমর্থনে একটি বর্ণাঢ্য প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬ জুন ২০২৫, রবিবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জের হসপিটাল মোড় থেকে হনুমান মন্দির, পলাশী পর্যন্ত ‘নারী সম্মান যাত্রা’ নামে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়।
এই যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, (suvendu) যিনি আশীষ ঘোষের পক্ষে জনসমর্থন তৈরির জন্য জোরালো প্রচার চালিয়েছেন। এই যাত্রা নারী নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়নের প্রতি বিজেপির অঙ্গীকার তুলে ধরার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার মঞ্চ হিসেবেও কাজ করেছে।
‘নারী সম্মান যাত্রা’র উদ্দেশ্য
‘নারী সম্মান যাত্রা’র মূল লক্ষ্য ছিল কালীগঞ্জের ভোটারদের, (suvendu) বিশেষত নারী ভোটারদের কাছে পৌঁছানো এবং তাদের নিরাপত্তা ও সম্মানের প্রতি বিজেপির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা। বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনকালে নারী নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) এই যাত্রায় বলেন, “তৃণমূলের আমলে নারীদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। সন্দেশখালি থেকে আরজি কর হাসপাতাল—এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে তৃণমূল সরকার নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমরা কালীগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী আশীষ ঘোষের নেতৃত্বে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করব।”
মিছিলটি হসপিটাল মোড় থেকে শুরু হয়ে পলাশীর হনুমান মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। হাজার হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা এতে অংশ নেন। মিছিলে ‘নারী সম্মান, বিজেপির অঙ্গীকার’, ‘বাংলায় পরিবর্তন চাই’ এবং ‘আশীষ ঘোষ জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। বিজেপির পতাকা, ব্যানার এবং আশীষ ঘোষের ছবি সম্বলিত পোস্টার মিছিলে উৎসবের আমেজ যোগ করে।
কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের প্রেক্ষাপট
কালীগঞ্জ (suvendu) বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হয়েছে বিধায়ক সৌমেন রায়ের মৃত্যুর পর। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সৌমেন রায় এই আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তবে, বিজেপি এই উপনির্বাচনকে তাদের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই অঞ্চলে তাদের ভোটের ব্যবধান কমে যাওয়ায়।
এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “কালীগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী আশীষ ঘোষের সমর্থনে নারী সম্মান যাত্রা। শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu) নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ মিছিলে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনরোষ প্রকাশ।” এই পোস্ট থেকে বোঝা যায়, বিজেপি এই উপনির্বাচনকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনমত গড়ার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে।
আশীষ ঘোষ: বিজেপির প্রার্থী
আশীষ ঘোষ কালীগঞ্জের একজন পরিচিত মুখ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির স্থানীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং সামাজিক কাজের মাধ্যমে এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, আশীষ ঘোষের সাংগঠনিক দক্ষতা এবং স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সংযোগ তাঁকে এই নির্বাচনে শক্তিশালী প্রার্থী করে তুলেছে। শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) বলেন, “আশীষ ঘোষ কালীগঞ্জের উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন। তিনি এই অঞ্চলের মানুষের সমস্যা বোঝেন এবং তাদের পাশে থাকবেন।”
তৃণমূলের বিরুদ্ধে সমালোচনা
‘নারী সম্মান যাত্রা’র সময় শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের শাসনে বাংলায় নারী নিরাপত্তা শূন্যের কোঠায়। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা এবং সন্দেশখালির মতো ঘটনাগুলো তৃণমূলের ব্যর্থতার প্রমাণ।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, তৃণমূল সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে ওবিসি তালিকা তৈরি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) কালীগঞ্জের ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, “এই উপনির্বাচন বাংলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আপনারা আশীষ ঘোষকে ভোট দিয়ে বিজেপিকে জয়ী করুন, যাতে আমরা এই অঞ্চলে উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে পারি।”
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেস এই ‘নারী সম্মান যাত্রা’কে বিজেপির ‘রাজনৈতিক নাটক’ হিসেবে সমালোচনা করেছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি সবসময় সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করে। কালীগঞ্জের মানুষ তৃণমূলের (suvendu) উন্নয়নের পক্ষে। আমরা এই নির্বাচনে জয়ী হব।” তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নের কাজ হয়েছে। বিজেপির নারী সম্মানের কথা মুখে মুখে, কাজে নয়।”
বড় খবর! Royal Enfield Bullet 350-এর দামে বদল, এখনকার কেনার খরচ কত দেখে নিন
জনগণের প্রতিক্রিয়া
‘নারী সম্মান যাত্রা’ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “কালীগঞ্জে বিজেপির নারী সম্মান যাত্রা মানুষের মনে আশা জাগিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আশীষ ঘোষের জয় নিশ্চিত।” তবে, কিছু স্থানীয় বাসিন্দা মনে করেন, এই ধরনের মিছিল নির্বাচনী প্রচারের অংশ হলেও প্রকৃত সমস্যা সমাধানের জন্য কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
কালীগঞ্জের (suvendu) একজন বাসিন্দা বলেন, “নারী নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা চাই, যিনি জিতুন, তিনি এই এলাকায় উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।” আরেকজন বলেন, “তৃণমূলের প্রকল্প আমাদের উপকার করেছে। বিজেপির এই মিছিল রাজনৈতিক স্টান্ট।”
নির্বাচনের গুরুত্ব
কালীগঞ্জ উপনির্বাচন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। বিজেপি এই নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে ফাটল ধরাতে চায়। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস তাদের আধিপত্য ধরে রাখতে মরিয়া।
এক্স-এ আরেকটি পোস্টে বলা হয়েছে, “কালীগঞ্জে তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে। নারী সম্মান যাত্রা বিজেপির জন্য গেমচেঞ্জার হতে পারে।” এই পোস্ট থেকে বোঝা যায়, এই যাত্রা বিজেপির প্রচারে নতুন গতি এনেছে।
কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী আশীষ ঘোষের সমর্থনে ‘নারী সম্মান যাত্রা’ রাজনৈতিক মঞ্চে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এই মিছিল নারী নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়নের প্রতি বিজেপির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে।
তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠন এবং সরকারি প্রকল্পের প্রভাব এই নির্বাচনকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে পরিণত করেছে। নির্বাচনের ফলাফল কালীগঞ্জের ভবিষ্যৎই নয়, রাজ্যের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনাও নির্ধারণ করবে।