বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার বিধানসভার সচিব সুকুমার রায়ের কাছে গিয়ে প্রস্তাব জমা দেন শুভেন্দু অধিকারীর নের্তৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল। যাতে ছিলেন ৫০ জন বিজেপি বিধায়ক। দাবি একটাই, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ। অভিযোগ, বিধানসভায় বিরোধীদের দাবিকে কর্ণপাত করেন না তিনি। রাজ্যের শাসকদলের হয়ে নিজের নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে গিয়েছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বিজেপির
মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর বিধানসভার চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপির বিধায়কেরা। সেই সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, “বুদ্ধবাবু এখনও সুস্থ আছেন তাঁর কাছে পাঠ নিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা কীভাবে চালাতে হয়।” শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরই ফের জলঘোলা শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে।
রেল দুর্ঘটনার দিন ফের বিপত্তি, বাংলা থেকে উড়ো ফোন, বোম মেরে ট্রেন ওড়ানোর হুমকি
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মমতা বিরোধিতার মধ্যে প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে টেনে এনে কৌশলে ফের বাম ভোটকে কাছে পেতে চাইছে শুভেন্দু। কারণ রাজ্যে বিজেপির পর এখনও সিপিএমের একটা জনসমর্থন রয়েছে। ভোটবাক্সে যদিও তা প্রতিফলিত হয়নি, তবুও বাম সমর্থকদের একটা বড় অংশ আজও সিপিএমকে ভোট দেয়। তাই আগামীদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানকে দুর্বল করতে সেই বাম সমর্থনকেই কাজে লাগাতে চান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিপিএম তথা সেই সমস্ত বাম সমর্থকদের কাছে বড় আবেগের জায়গা। সেই আবেগকে উস্কে দিয়েই কী হাওয়া ঘোরানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন শুভেন্দু? প্রশ্ন উঠছে এমনই।
অতীতেও বাম ভোটকে পেতে প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রীর নাম একাধিকবার তুলেছিলেন তিনি। এমনকি তৃণমূল বিরোধী মহাজোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও তা কোনওভাবেই সম্ভব হয়নি। কারণ আদর্শগত সংঘাত, জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গঠন থেকে রাজ্যে তৃণমূলের দাপটে বার বার ভেস্তে গিয়েছে শুভেন্দুর মহাজোটের ইচ্ছা। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর নিজের দলেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। এমন অবস্থায় শুভেন্দুর মুখে বুদ্ধবাবুর প্রশংসা আদৌ কতটা মন গলবে সিপিএমের তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
কয়েকগুণ বাড়ল ভারতীয় সেনার চিন্তা! প্যাংগং হ্রদে চিনা সেতুতে চলছে যান
২০১৯ লোকসভায় বামেদের সাহায্যেই বিজেপি ঝুলিতে ১৮ টি আসন পায়। এই রাম-বাম জোট নিয়ে সরব হয়েছিল তৃণমূল। গত বিধানসভা ও এবার লোকসভা ভোটেও একই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তাতে হয়তো কিছুটা রাজনৈতিক ফায়দাও পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থ্যাত্ রাম-বাম জোটের তত্ত্ব যে আখেড়ে তৃণমূলকেই ফায়দা দিচ্ছে তা অনেকেই এককথায় মানছেন। এদিকে চলতি বিধানসভা অধিবেশনে রাজ্যের শাসকদলের চাপে দিশেহারা রাজ্যের বিজেপি নেতারা। একদিকে অর্ন্তকলহ অন্যদিকে শাসকদলের চাপ। এই দিশেহারা অবস্থার মধ্যে বুদ্ধবাবুকে টেনে এনে ফের জোট জল্পনা বাড়াতে চাইলেন শুভেন্দু? প্রশ্ন উঠছে এমনই।