মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সন্দেশখালি (Sandeshkhali) সফরের আগে তৃণমূলে (TMC) যোগ দিলেন স্থানীয় নেতা সুজয় মণ্ডল, যিনি স্থানীয় রাজনীতিতে “সুজয় মাস্টার” নামে পরিচিত। গত বছর সন্দেশখালিতে শাসকবিরোধী আন্দোলনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জানা গেছে, সেই সময়ে তিনি বেশ কিছু বিতর্কিত নেতার বিরুদ্ধে মহিলাদের একজোট করেছিলেন, যার ফলে ওই অঞ্চলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তীব্র হয়ে ওঠে।
সন্দেশখালিকে সমৃদ্ধ করেছে বাংলার মায়েরা, তাঁদের প্রণাম: মমতা
সুজয় মণ্ডল, যিনি একজন সমাজকর্মী এবং স্থানীয় নেতা, সন্দেশখালির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিচিত। তিনি ২০২৩ সালে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বিশেষত শাহজাহান শেখ, উত্তম সর্দার, শিবু হাজরা এবং অন্যান্য বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে। সেই সময় তিনি মহিলাদের একটি সংগঠনে একত্রিত করার মাধ্যমে শাসকদলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। তার নেতৃত্বে সন্দেশখালির মহিলারা মুখ খুলেছিলেন এবং একযোগে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
এই আন্দোলনের কারণে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল যে, সুজয় মণ্ডল হয়তো শাসকদলের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে বিরোধী শিবিরে চলে যেতে পারেন। এমনকি, সন্দেশখালির ঘটনাগুলির পর সুজয় মাস্টারকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল এবং তিনি কিছু সময় জেলও খেটেছেন। যদিও এই পরিস্থিতি তার রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও জটিল করে তুলেছিল, তবে তার দৃঢ়তা এবং রাজনৈতিক সচেতনতা তাকে স্থানীয় স্তরে অনেক সমর্থক এনে দিয়েছিল।
৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে মুক্তি দিচ্ছে বাংলাদেশ, প্রত্যাহার মামলাও
তবে, কিছুদিন আগেই সুজয় মণ্ডল আবার তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতির পর, অনেকেই ধারণা করেছিলেন যে তিনি শাসকদলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। কিন্তু, এখন সুজয় মাস্টার তৃণমূলে যোগ দিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করলেন। তার এই সিদ্ধান্তের ফলে সন্দেশখালির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবার নতুন মোড় নিয়েছে।
এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুজয় মণ্ডলের তৃণমূলে যোগদান দলকে আরও শক্তিশালী করবে এবং সন্দেশখালির রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত হবে। শাসকদল মনে করে, সুজয়ের মতো নেতা দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারেন, কারণ তার স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে এবং তিনি জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।
কৃষকদের ডাকা ধর্মঘটের জেরে স্তব্ধ রেল-যান চলাচল, বেকায়দায় জনজীবন
তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুজয়ের তৃণমূলে যোগদান সন্দেশখালির অন্যান্য দলের মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। বিরোধী দলগুলো এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবে তা দেখতে হবে। অনেকেই মনে করছেন, সুজয়ের যোগদান শাসকদলের পক্ষ থেকে কোনো বিশেষ কৌশল হতে পারে, যা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পরিবেশে পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে।
এই পরিস্থিতিতে সুজয় মণ্ডলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সন্দেশখালির রাজনৈতিক চিত্রে নতুন আলো ফেলেছে। তার যোগদান নিয়ে সবার দৃষ্টি এখন রাজ্যের অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে, যারা এই পরিবর্তনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইবে।