দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে শীত। শুক্রবার ভোরে দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলায় এক লাফে পারদ নেমেছে ১৪ ডিগ্রির ঘরে। পুরুলিয়া, কল্যাণী থেকে শ্রীনিকেতন—সবত্রই শীতের স্পষ্ট হাওয়া। উত্তরবঙ্গেও ঠান্ডার ছোঁয়া তীক্ষ্ণ হচ্ছে৷ আলিপুরদুয়ারে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি৷ দার্জিলিঙে আরও নিচে নেমেছে৷ পারদ পৌঁছেছে ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
কিন্তু এই ঠান্ডার পেছনে ‘প্রাকৃতিক চালচিত্র’টা একটু অন্যরকম। কারণ, বঙ্গোপসাগরের ওপর শক্তি জোগাড় করছে ঘূর্ণিঝড় দিটওয়া। ঝড়টি এ রাজ্যে সরাসরি হামলা না করলেও, তার ঘূর্ণাবর্তীয় টান শীতকে আরও খানিকটা উস্কে দিয়েছে বলেই মত আবহবিদদের।
ঝড়ের গতিপথ কোথায়?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষণে, দিটওয়া বর্তমানে শ্রীলঙ্কার উপকূল ঘেঁষে উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে উঠে আসছে। ঘণ্টায় প্রায় ১০ কিমি বেগে সরে এসে ৩০ নভেম্বর নাগাদ ঝড়টি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঢুকতে পারে। তার পর লক্ষ্য থাকবে—উত্তর তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি এবং দক্ষিণ অন্ধ্রের উপকূল।
শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় ঝড়ের কেন্দ্র ছিল ত্রিনকোমালির অদূরে। চেন্নাই, পন্ডিচেরি, কারাইকাল—সব বড় উপকূলের খুব দক্ষিণে অবস্থান করছে এই আবহ-অশনি।
বাংলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা? Sudden Winter Drop West Bengal
দিটওয়া অতিক্রম করলেও বঙ্গের আকাশ এখনও শুষ্ক। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বললেই হয়। বরং আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা উল্টোই কিছুটা বাড়তে পারে। পরবর্তী চার দিনেও রাজ্যের আবহাওয়ায় বড়সড় ওঠানামার সম্ভাবনা কম।
কলকাতার পারদও সামান্য ওপরে। শুক্রবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.৩ ডিগ্রি—গত কয়েক দিনের তুলনায় খানিক উষ্ণই বলা চলে।
নামকরণও নজরকাড়া
এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ইয়েমেন। কয়েক দিন আগেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি ‘সেনিয়ার’ আন্দামান-নিকোবর অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি ঝরিয়ে গিয়েছে। তার পর দিটওয়াই এখন নজর কাড়ছে আবহবিদদের।
শীত-ঝড়—দু’য়ের দ্বন্দ্বে আপাতত শুষ্কই রাজ্য। তবে পারদের আচরণ কোন দিকে মোড় নেয়, নজর থাকছে আকাশের দিকে।
