রাজ্যে বাতিল হওয়া ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু (Subhendu Adhikari) অধিকারী। তার দাবি, পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হওয়া ভুয়ো জব কার্ডের মাধ্যমে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই টাকা ফেরত না দিলে এবং দোষীদের শাস্তি না দেওয়া হলে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে আর কোনো টাকা দেবে না।
মঙ্গলবার সংসদে বাজেট আলোচনা চলাকালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে শিল্প নেই, কর্মসংস্থান নেই এবং কোনও দিশা নেই। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস তৃণমূল স্তরের মানুষকে লুঠ করছে বলে মন্তব্য করেন সীতারমন।
এই নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘উনি নথি হাতে নিয়ে কথা বলেছেন, উনি কান দিয়ে দেখেননি চোখ দিয়ে দেখেছেন। ২৫ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ডে টাকা তোলা হয়েছে। এই টাকা যতক্ষণ না ফেরত দিচ্ছেন আর চোরেদের জেলে পাঠাচ্ছেন ততদিন কেন্দ্র টাকা দেবে না। আমরা প্রকল্প বন্ধ করিনি। টাকা আমরা বন্ধ করিনি। ভারত সরকারের করের টাকা লুঠ হয়েছে, যার পরিমাণ ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি।’
শুভেন্দুবাবুর দাবি, ‘কংগ্রেস ১০০ দিনের কাজে দিয়েছিল ৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। আর মোদীজি দিয়েছেন ৫৪ হাজার কোটি। অন্য রাজ্যে যে কার্ড বাতিল হয়েছে তাতে কোনও টাকা তোলা হয়নি। ওটা টেকনিক্যাল ফল্ট ছিল। আধার আর জব কার্ড যুক্ত করতে গিয়ে বাতিল হয়েছে। এই রাজ্যে যেটা ব্যতিক্রম, যাদের জবকার্ড ডিলিট হয়েছে তারা টাকা তুলে নিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের লোক মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে কাজ করেছে দেখিয়ে বাংলাদেশের অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। হায়দরাবাদে কাজ করেন এমন পরিযায়ী শ্রমিকের হায়দরাবাদের অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে।’
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়টি নিয়ে কোনো স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে, এই বিতর্ক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। রাজ্যের ভুয়ো জব কার্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত হতে পারে, বিশেষ করে যখন অর্থনৈতিক দিক থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসকদলের জন্য আগামী দিনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে, কারণ বিরোধী দলের এমন তীব্র অভিযোগ রাজ্যের খ্যাতি এবং কেন্দ্রের সহযোগিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।