হুগলি: স্কুলের সিনিয়ার ছাত্রীর সঙ্গে অন্যরকম সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল নবম শ্রেণির পড়ুয়া৷ বাড়িতে তাদের সম্পর্ক বুঝতে পেরে বকাবকি করেছিল বাবা-মা৷ অভিমানে আত্মঘাতী নাবালিকা৷ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়ায়৷ তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার৷ শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়৷
পরিবার সূত্রে জানা যায়, চুঁচুড়ার একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে৷ ওই স্কুলেরই এক সিনিয়ার দিদির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার৷ পরে সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক অন্যদিকে মোড় নেয়৷ বাড়িতে যাতায়াত বাড়তে থাকে৷ উঁচু ক্লাসে পড়লেও ওই দিদিকে নিজের বন্ধু বলেই পরিচয় দিত নবম শ্রেণির ছাত্রী৷ তাদের এই সম্পর্ক টের পেয়ে যায় পরিবার৷
ছাত্রীর বাবা-মা বুঝতে পারেন দুই মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়৷ এরপরই পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হতেই তাঁরা মেয়েটিকে তাঁদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করে৷ বাড়িতে আসতে বারণ করলেও ওই সিনিয়ার দিদি প্রায়ই ক্লাস নাইনের ছাত্রীটি বাড়ির সামনে চলে আসত৷ জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে গল্প করত তারা৷
মৃত ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘‘ঘটনার দিন আমি দোকানে ছিলাম৷ ওর মা পিকনিকে গিয়েছিলেন৷ মেয়েকেও নিয়ে যেতে চেয়েছিল৷ কিন্তু ও যায়নি৷ বাড়িতে একাই ছিল৷ আমি দুপুরে দোকান বন্ধ করে খেতে আসি৷ তখন দেখি মেয়ের হাতে একটা মোবাইল৷ ওকে জিজ্ঞেস করি কে দিয়েছে৷ কিন্তু ও কোনো উত্তর দেয়নি৷ কিন্তু আমরা বুঝতে পারি এটা ওই মেয়েটিরই কাজ৷ যোগাযোগ যাতে বন্ধ না হয় তাই আমার মেয়েকে মোবাইল দিয়েছিল৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ঘটনার দিন দুপুরে আমি ও মেয়ে খেতে বসি৷ মেয়ে অল্প খেয়ে উঠে যায়৷ আমি তাকে খেতে বললেও সে শোনেনি কথা৷ এরপর ফের আমি দোকানে চলে যাই৷ রাত ১০টার সময় দোকান থেকে ফিরে মেয়েকে ডাকাডাকি করি৷ কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি ওর৷ এরপর জানলা থেকে উঁকি দিয়ে দেখি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে৷’’
পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে৷ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পরিবারের লোকজনদের৷ দেহ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ ওই নাবালিকার মা বলেন, ‘‘আমাদের মেয়ে কেন এমন করল তা বুঝে উঠতে পারছি না৷ আমার মনে হয় ও মেয়েটাই আমার মেয়েকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে৷ নাহলে আমার মেয়ে এরকম করার কথা নয়৷”