বাজারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে প্যারাসিটামল-সুগারের ভুয়ো ওষুধ! কিভাবে জানবেন আসল কি নকল?

বাজারে জাল ওষুধের (Fake Medicine) বাজারে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে, জ্বরের ওষুধ প্যারাসিটামল, সুগারের ওষুধ, প্রেসারের ওষুধ, অ্যান্টাসিড এবং অন্যান্য…

State Drug Control Issues Alert Over Fake Medicines as Fake QR Codes Spread

বাজারে জাল ওষুধের (Fake Medicine) বাজারে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে, জ্বরের ওষুধ প্যারাসিটামল, সুগারের ওষুধ, প্রেসারের ওষুধ, অ্যান্টাসিড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার ওষুধের মধ্যে ভুয়ো পণ্য বিপুলভাবে বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠেছে যে, সাধারণ মানুষ যে সব ওষুধ কিনে খান, সেগুলি ভুয়ো হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে একটি সিদ্ধান্ত নেয়, যার মাধ্যমে ৩০০টি ওষুধে কিউআর কোড বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে প্যারাসিটামল, ডাইজিন, থাইরয়েডের ওষুধসহ নানা ওষুধ অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিউআর কোড স্ক্যান করলেই একমাত্র সত্যিকার ওষুধের পরিচয় জানা সম্ভব, কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সেগুলিও এখন জাল করা হচ্ছে। সঠিক কোডের বদলে, ভুয়ো কিউআর কোড ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন।

   

এ ব্যাপারে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। জানা গেছে, হিমাচল প্রদেশ ও বিহার থেকে জাল কিউআর কোড যুক্ত ওষুধগুলি পশ্চিমবঙ্গে আসছে। তবে, বেশিরভাগ মানুষ এই বিষয়টি জানেন না এবং এক্সপায়ারি ডেট দেখে নিশ্চিন্ত হয়ে ওষুধ কিনে বাড়ি নিয়ে যান। এর ফলে, অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, কোড স্ক্যান করলেও মোবাইলে কোনও তথ্য উঠে আসে না, যা আরও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পৃথ্বী বসু বলেছেন, “প্রেশারের বা সুগারের ওষুধ প্রায় সব বাড়িতেই ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ওষুধে জালিয়াতি হচ্ছে, যা আমাদের সবাইকেই আতঙ্কিত করছে। আমাদের জানা নেই কখন কি বিপদ আসবে। যদি প্রশাসন সাহায্য না করে, তবে এই পরিস্থিতি আটকানো সম্ভব নয়।”

ফার্মা সংস্থার কর্ণধার সোমনাথ ঘোষও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বারবার নির্দেশ দিয়েছে, সঠিক হোলসেলারের কাছ থেকে ওষুধ কিনতে, কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম কমানোর জন্য জাল ওষুধ বিক্রি করছে।

বিশিষ্ট চিকিৎসক যোগীরাজ রায় পরামর্শ দিয়েছেন, ক্রেতাদের উচিত বাড়ি গিয়ে কিউআর কোড স্ক্যান করা, যাতে তারা নিশ্চিত হতে পারেন যে, তারা যেই ওষুধ কিনেছেন, তা আসল ওষুধ। এই ব্যাপারে সাধারণ মানুষকেও আরও সতর্ক হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

এভাবে, বাজারে ভুয়ো ওষুধের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় রাজ্য সরকারের কাছে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠছে। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তাদের অজান্তে কোনও ক্ষতিকারক ওষুধ গ্রহণ না হয়।