মিলন পণ্ডা, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পদ্মপুকুরিয়ায় ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে মাত্র সাত বছরের এক শিশুকন্যার উপর প্রতিবেশী কর্তৃক পাশবিক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় (Kanthi child rape case) অবশেষে সুবিচার মিলল। কাঁথির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত তথা পকসো আদালতের বিচারক অজেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সোমবার অভিযুক্ত শঙ্কর কুমার দিণ্ডাকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং মঙ্গলবার তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন।
সাজার পাশাপাশি আদালত অভিযুক্তের উপর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেছেন; অনাদায়ে আরও দু’বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, নির্যাতিতা শিশুকন্যাকে মোট সাড়ে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই অর্থের মধ্যে জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্র থেকে ৪ লক্ষ টাকা এবং অভিযুক্তের জরিমানার ৫০ হাজার টাকা (যদি সে প্রদান করে) নির্যাতিতার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ঘটনার বিবরণ:
২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল রাত প্রায় ১টার সময় শিশুটির ঠাকুমা বাথরুমে গেলে ঘরে একা থাকা শিশুকন্যার সুযোগ নেন প্রতিবেশী শঙ্কর কুমার দিণ্ডা। তিনি শিশুটির যৌনাঙ্গে আঙুল প্রয়োগসহ পাশবিক নির্যাতন চালান। এতে শিশুটির যৌনাঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। পরিবারের লোকজন তৎক্ষণাৎ শিশুটিকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন ঠাকুমা কাঁথি মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। ধর্ষণ ও পকসো আইনে মামলা রুজু হয় এবং কাঁথি মহিলা থানার তৎকালীন আইসি রুমা মণ্ডলের তদন্তে চার্জশিট জমা পড়ে।
মামলায় মোট ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর লাগাতার শুনানির পর অবশেষে দোষী সাব্যস্ত হন অভিযুক্ত। সরকারি আইনজীবী রামকৃষ্ণ পণ্ডা জানান, “আদালত অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। নির্যাতিতা শিশু ও তার পরিবার সুবিচার পেয়েছে।”
মঙ্গলবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে আনন্দাশ্রুতে ভেঙে পড়েন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। এই রায়কে এলাকাবাসী ‘দৃষ্টান্তমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন।
