শান্তনু পাম, পশ্চিম মেদিনীপুর: কেশপুরে (Keshpur) ফের রাজনৈতিক পারদ চড়ছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের দলনেতা মোহাম্মদ রফিকের মন্তব্যকে ঘিরে এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন কেশপুরের বিধায়িকা তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা। সোমবার বিকেলে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে মন্ত্রী কটাক্ষের সুরে বলেন, “ওনাকে ব্লক সভাপতি করিয়ে দিতে পারিনি বলেই আজ আমার বিরুদ্ধে কটাক্ষ করছেন রফিকবাবু।”
শিউলি সাহা জানান, “একসময় উনি অনুরোধ করেছিলেন, যেন রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে এক বছরের জন্য হলেও ব্লক সভাপতি করা হয়। আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এরপর থেকেই উনি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছেন।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “ওনি তো একসময় দল ছেড়ে অন্য দলে গিয়েছিলেন। তখন আমি নিজে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে কথা বলে ওনাকে আবার দলে ফিরিয়ে এনেছিলাম। সেই উপকারের পরেও আজ আমাকে বহিরাগত বলা হচ্ছে। এটা সত্যিই হতাশাজনক।”
এরপর শিউলি সাহা অতীতের ঘটনা টেনে বলেন, “ওনি একসময় মেদিনীপুরে কাউন্সিলর হতে চেয়েছিলেন। কেশপুর থেকে ভোটার তালিকায় নাম কেটে মেদিনীপুরে নাম তুলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলর হতে পারেননি। পরে আমি নিজে ওনাকে পরামর্শ দিই কেশপুরে ফের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে, এমনকি জেলা পরিষদ প্রার্থী হিসেবেও ওনার নাম প্রস্তাব করি।”
মন্ত্রী বলেন, “আজকের দিনে কেশপুরে যারা বাস্তবে দলের কাজ করে, তারা সকলেই আমার সঙ্গে আছে। দু-একজন অন্যদিকে গেলেও তাতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। রফিকবাবু রাত্রে এক কথা বলেন, দিনে আরেক কথা। কেশপুরের মানুষ এখন ভালোভাবেই বুঝে গেছেন কে দলের স্বার্থে কাজ করছেন।”
শিউলি সাহা আরও যোগ করেন, “আমি কেশপুরকে মন থেকে ভালোবাসি। এখানকার প্রতিটি মানুষ আমার পরিবারের মতো। রফিকবাবুর কেশপুরপ্রেম কতটা আন্তরিক, তা মানুষ জানে। এখন সবাই বুঝতে পারছে কে কেশপুরের পাশে থেকে কাজ করছেন, আর কে শুধু নামমাত্র রাজনীতি করছেন।”
SIR নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, “এসআইআর হলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে যদি কেউ কুচক্রীভাবে বৈধ ভোটারদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে কেশপুরে যেখানে যা প্রয়োজন, তা করা হবে।”
রাজনৈতিক মহলে এই পাল্টা মন্তব্যে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ অশান্তি ফের প্রকাশ্যে এসেছে। বিশেষত, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল যেখানে ঐক্যের বার্তা দিতে চাইছে, সেখানে প্রকাশ্যে এই ধরনের মন্তব্য দলীয় নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
তবে শিউলি সাহার অনুগামীদের দাবি, “মন্ত্রী কেবল সত্যিটাই বলেছেন। যারা দলের ক্ষতি করছে, তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছেন তিনি।” অপরদিকে রফিক অনুগামীরা বলছেন, “মন্ত্রী নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে এসব বলছেন।”


