কাকদ্বীপ ১৪ নভেম্বর: দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তোলপাড়। আইনের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সোনিয়া হালদার (২১) নিজের প্র্যাকটিস চেম্বারেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার রাতে প্রতাপাদিত্য গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াপাড়া এলাকায় আইনজীবী শেখ মনোয়ার আলমের চেম্বার থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পর থেকেই ওই আইনজীবী পলাতক।
পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের সম্পর্কে জটিলতা, বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং মানসিক নির্যাতনের ফলে সোনিয়া এই চরম পদক্ষেপ নিয়েছেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু অংশে ধর্মান্তকরণের চেষ্টা বা ‘লাভ জিহাদ’-এর অভিযোগ উঠলেও পুলিশ এবং পরিবারের প্রাথমিক বক্তব্যে তেমন কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায়।সোনিয়া কাকদ্বীপের গান্ধীনগর এলাকার বাসিন্দা।
নিজ গড়ে পিছিয়ে তেজস্বী! ১,২৭৩ ভোটে এগিয়ে বিজেপির সতীশ
আইন নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন, স্বপ্ন ছিল বড় আইনজীবী হওয়ার। কাকদ্বীপ আদালতের নামী আইনজীবী শেখ মনোয়ার আলমের কাছে প্র্যাকটিস করতে যেতেন প্রায় প্রতিদিন। পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার সকালেও সোনিয়া চেম্বারে গিয়েছিলেন।
রাতে খবর না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যান সবাই। শেষমেশ চেম্বারের লোকজন ফোন করে জানান, দরজা ভেঙে সোনিয়ার ঝুলন্ত দেহ দেখা গেছে। খবর পেয়ে কাকদ্বীপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোনিয়ার ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় একটি চিঠি। পরিবারের দাবি, চিঠিতে স্পষ্ট লেখা আছে যে আইনজীবীর সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষমেশ পিছিয়ে যান মনোয়ার। মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে সোনিয়া এই পথ বেছে নেন। সোনিয়ার মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার মেয়ে খুব ভালো ছিল। ওই লোকটা ওকে প্রতারণা করেছে। বিয়ে করবে বলে সম্পর্ক রেখেছে, তারপর ছেড়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে এই অপমান সহ্য করতে পারেনি।”
বাবা বিজয় হালদার জানান, “আমরা কাকদ্বীপ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। আমার মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।”পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ মনোয়ার আলমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা (৩০৬ ধারা) সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
তিনি পলাতক। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। কাকদ্বীপ থানার এক আধিকারিক জানান, “প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যাই মনে হচ্ছে। চিঠি উদ্ধার হয়েছে, তাতে সম্পর্কের কথা উল্লেখ আছে। তবে পুরো বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে আরও স্পষ্ট হবে।”


