ঝাড়গ্রাম: রাজ্যে অবৈধভাবে বালি পাচারের অভিযোগে নজরদারি ও অভিযান শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেই তদন্তে বালি দুর্নীতি নতুন করে উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে। ঠিক সেই সময়েই ঝাড়গ্রামে অবৈধ বালি পাচার রুখতে বড়সড় উদ্যোগ নিল ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। টানা পাঁচ দিনের অভিযানে মোট ৯ টি বালি বোঝাই যান বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৭ জনকে।
পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের সময় জামবনি থানার চিঁচড়া এলাকায় জাতীয় সড়কে বসানো হয় বিশেষ নাকা চেকিং। সেখানেই আটক হয় সাতটি বালি বোঝাই ট্রাক। পরে জামবনি থানার আই.সি অভিজিৎ বসু মল্লিকের নেতৃত্বে পৃথক অভিযানে বাংলা ও ঝাড়খণ্ড সীমান্তের ধড়সা এলাকা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় আরও দুটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আটক হওয়া গাড়িগুলোর অধিকাংশের কাছেই বৈধ সিও কিংবা অন্য কোনও বৈধ নথি ছিল না।
SIR আবহে মুর্শিদাবাদে নেমেছে পদবি পরিবর্তনের ঢল
ধৃতদের মধ্যে ২ জন ট্রাক্টর চালকের পরিচয় জানা গিয়েছে সরোজ বাগদি, বাড়ি ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার কুলডিহা গ্রামে। অপরজন লক্ষীরাম মুর্মু, ঝাড়খণ্ডের বাতবাটি গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতে পেশ করলে মহামান্য বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের অনুমান, এঁরা পাচারচক্রের নীচুতলার কর্মী হলেও তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসতে পারে পুরো সিন্ডিকেটের শিকড়।
ঝাড়গ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) গুলাম সারওয়ার বলেন, “অবৈধ বালি পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বালি পরিবহন করলে কোনওভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।”তিনি আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং আটক করা যান-বহন গুলির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বালি তোলার অনুমতিপত্র জালিয়াতি, অর্থপাচার এবং সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইডি।
সেই পরিস্থিতিতে ঝাড়গ্রামে পুলিশের সক্রিয়তা প্রশাসনিক মহলে নতুন গুরুত্ব পাচ্ছে। পরিবেশবিদদের মতে, লাগামহীন বালি উত্তোলনে নদীর গতিপথ বদলে যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেতু, সড়ক এবং জলজ বাস্তুতন্ত্র। তাই শুধু যান বাজেয়াপ্ত করাই নয়, মূল পাচারচক্রকে ধরা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এর আগে একাধিকবার অবৈধ বালি পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সাফল্য পেয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। সম্প্রতি এই অভিযান জোরদার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
