HomeWest BengalSouth Bengalনন্দীগ্রামে বিজেপি নেতাকে বাছুর চোর লিখে পোস্টার বিতর্ক

নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতাকে বাছুর চোর লিখে পোস্টার বিতর্ক

- Advertisement -

নন্দীগ্রাম: পূর্ব মেদিনীপুরের তেখালি বাজারে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। ভোরবেলা ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতেই তাঁদের নজরে আসে একাধিক পোস্টার (Nandigram BJP poster), যেখানে বিজেপি নেতা ও খিচুড়ি বিধানসভার ইনচার্জ সাহেব দাসকে উদ্দেশ্য করে লেখা, “সাহেব দাস তিনি বাছুর চোর!” এই অপমানজনক দাবি মুহূর্তে আগুনে ঘি ঢালে নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক পরিবেশে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিজেপির কর্মীরা এসে পোস্টারগুলি ছিঁড়ে ফেলে এবং অভিযোগ করেন এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।

সাহেব দাস সরাসরি জানান, “এটি শুধুই রাজনৈতিক নোংরামি। যদি আমি সত্যিই চুরি করে থাকি, তবে অভিযোগকারীকে থানায় লিখিতভাবে জানাতে হবে। গোপনে পোস্টার লাগিয়ে কারও ভাবমূর্তি নষ্ট করা কাপুরুষোচিত কাজ।” তিনি আরো জানান যে তিনি তেখালি ফাঁড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে এফআইআর দায়ের করেছেন এবং তিনি বিষয়টি আইনি পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তাঁর অভিযোগ, “নন্দীগ্রামে যারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে শাসন চালাচ্ছে, তারাই রাজনৈতিকভাবে আমাকে মোকাবিলা করতে না পেরে এই ধরনের কদর্য অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

   

জেলা বিজেপির তরফে আরও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। জেলা সভাপতি মলয় সিনহা বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব চরমে পৌঁছেছে। তারা মানুষের সমস্যার কথা বলতে ব্যর্থ, তাই এখন ব্যক্তিগত আক্রমণ ও অপশব্দের রাজনীতি শুরু করেছে।” তাঁর দাবি, এই পোস্টার তৃণমূলের সরাসরি পরিকল্পিত অপমানমূলক প্রচার।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, “এটি সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। বাছুর চুরির অভিযোগ আগে থেকেই নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূল এর সঙ্গে যুক্ত নয়।” তৃণমূলের দাবি, বিজেপির দুর্বল জনসংযোগের ফলেই মানুষ এমন পোস্টার লাগিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন।

স্থানীয় জনমানসে এখন দু’দলে বিভক্ত পরিস্থিতি। নন্দীগ্রামের রাজনীতি বরাবরই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ; ফলে এ ধরনের পোস্টার দ্রুতই বড় বিতর্কে রূপ নেয়। এলাকার সাধারণ মানুষ মনে করছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তেজনা ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নন্দীগ্রামে তৃণমূল ও বিজেপির ক্ষমতালড়াই এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সামান্য ঘটনাও বড় রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি করে।

বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরাও চিন্তিত। তেখালি বাজারের এক দোকানদারের কথায়, “আমরা চাই না বাজারের পরিবেশ খারাপ হোক। রাজনীতি থাকুক রাজনৈতিক মঞ্চে—বাজারে নয়।” তাঁদের মূল দাবি, রাজনৈতিক বিরোধ যেন জনজীবনে প্রভাব না ফেলে।

এদিকে, পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। কে বা কারা রাতের অন্ধকারে পোস্টার লাগিয়েছিল, কোথা থেকে মুদ্রিত হয়েছে, এবং এর পেছনে প্রকৃত উদ্দেশ্য কী—সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে স্থানীয় প্রশাসন।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular