মিলন পণ্ডা, কাঁথি: দীপাবলি উৎসবের আগে বড়সড় সাফল্য পেল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বাজি ও বাজি তৈরির কাঁচামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া বাজির ওজন প্রায় ১৫৯০ কেজি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম পিন্টু মিরদা, বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা থানার বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুলালপুর গ্রামে। সে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বাজি তৈরির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। দীপাবলি উপলক্ষে অবৈধভাবে প্রচুর বাজি মজুত করে রাখে সাতমাইল মিল বাজার এলাকার একটি গোডাউনে।
গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পর কাঁথি থানার আইসি প্রদীপ কুমার দান এবং টাউন অফিসার প্রণব বেরা নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোডাউনটিতে হানা দেয়। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ২২ বস্তা বাজি এবং ৪২টি কাটুন বাজি তৈরির উপকরণ। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫৯০ কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বাজিগুলির মধ্যে ছিল উচ্চ শব্দের চক্রবাজ, ফুলঝুরি, রকেটসহ একাধিক বিপজ্জনক বাজি। বাজিগুলি পরিবেশ আদালতের নির্ধারিত নিয়মের বাইরে তৈরি করা হয়েছিল। কোনও বৈধ অনুমতি ছাড়াই এত বিপুল পরিমাণ বাজি মজুত করেছিল অভিযুক্ত।
ধৃত পিন্টু মিরদাকে শুক্রবার কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বাজিগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছিল এবং এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কাঁথি থানার আইসি প্রদীপ কুমার দান বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা সাতমাইলের গোডাউনে হানা দিই। সেখানে প্রায় ১৫৯০ কেজি বাজি উদ্ধার করা হয়েছে এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে পণ্য ওঠানামা চলছিল। দীপাবলির আগে এমন বিপুল পরিমাণ বাজি মজুতের খবর এলাকাবাসীর মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপাবলি ঘিরে জেলার বিভিন্ন বাজারে অবৈধ বাজির ব্যবসা রুখতে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে শব্দবাজি বিক্রি বা সংরক্ষণ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার পর কাঁথি ও আশপাশের এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, “দীপাবলির আগে পুলিশ এমন অভিযান চালানোয় স্বস্তি পেয়েছি। প্রতিবছর এই সময়ে অবৈধ বাজির কারবার বাড়ে। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”