কলকাতা: বর্ষা শুরু হলেও দক্ষিণবঙ্গে মিলছে না স্বস্তি। একদিকে গরম, অন্যদিকে ভ্যাপসা আবহাওয়ায় নাকাল জনজীবন। বর্ষা ঢুকে পড়লেও এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে নিয়মিত বৃষ্টি না হওয়ায় জনসাধারণকে তীব্র গরম ও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। এর মধ্যেই আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে চলবে বৃষ্টিপাত। বিশেষ করে কলকাতা-সহ দক্ষিণের বেশ কয়েকটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে।
৩০ জুন পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আজ, বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বৃষ্টি আরও জোরালো হতে পারে। হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবারও বৃষ্টি চলবে। সেদিন ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বীরভূমে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, উত্তরবঙ্গেও সক্রিয় বর্ষা। আজ থেকে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের কিছু অংশে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনি ও রবিবারও এই জেলাগুলিতে বৃষ্টির দাপট বজায় থাকবে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
উত্তাল বঙ্গোপসাগর South Bengal Rain Forecast
এই মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতিও স্থিতিশীল নয়। আজ এবং আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার ও বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলবর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। কোথাও কোথাও সেই গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৫ কিমিতেও পৌঁছতে পারে। ফলে সমুদ্র হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত উত্তাল। এই অবস্থায় দুই দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
কলকাতায় তাপমাত্রা
কলকাতার তাপমাত্রা এখনও তেমন কমেনি। আজ শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৬১ শতাংশ- যা ভ্যাপসা গরমের অনুভূতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রায় তেমন কোনও বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। ফলে বর্ষার মধ্যে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলেও গরম ও আর্দ্রতার জেরে অস্বস্তি কাটছে না।
এই মুহূর্তে রাজ্যবাসীর কাছে সবচেয়ে বড় ভরসা হলো নিয়মিত বৃষ্টি, যাতে করে গরমের দাপট কিছুটা হলেও কমে এবং স্বস্তি ফিরে আসে সাধারণ মানুষের জীবনে।