কলকাতা: কসবার আইন কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য৷ এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। তদন্তের নেতৃত্বে রয়েছেন দক্ষিণ শহরতলি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার প্রদীপকুমার ঘোষাল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ও তাঁর বাবা-মায়ের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার অনুমতির জন্য ইতিমধ্যেই আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ধৃতদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে কলেজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রহরীও।
ঘটনার অভিযোগ কী বলছে?
নির্যাতিতার অভিযোগ অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে কলেজের গার্ডরুমে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছতেই তিন যুবক তাঁর উপর চড়াও হয় এবং ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনা প্রকাশ্যে এলে বৃহস্পতিবার নির্যাতিতা কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার পর তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় যাতে তিনি কাউকে কিছু না জানান।
প্রথমে দু’জন অভিযুক্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের বয়ান থেকেই মূল অভিযুক্তের পরিচয় পায় পুলিশ। এরপরই দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি, ঘটনার সময় কলেজ চত্বরে উপস্থিত থাকা নিরাপত্তারক্ষীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। গ্রেফতার করা হয় তাকেও।
তদন্ত কোন পথে? SIT to probe Kasba gang rape case
নির্যাতিতার জবানবন্দি ইতিমধ্যেই রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশ সেই বয়ান মিলিয়ে দেখছে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে। ঘটনার সময় কলেজ ক্যাম্পাসে কী ধরনের নজরদারি চালানো হচ্ছিল, সেখানেও নজর দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো-সহ একাধিক ফৌজদারি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
কলেজ কী বলছে?
কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালকে জেনারেল বডির জরুরি বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে কলেজ প্রশাসন অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে।
একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। আমরা পুলিশের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছি। নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হবে।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বৃহত্তর প্রেক্ষাপট
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা ব্যবস্থার হাল এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রতি প্রশাসনের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও সরকারি মহল এখন পর্যন্ত তদন্তের গতি ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতেই মূলত গুরুত্ব দিচ্ছে।