কলকাতা: রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী তিনি। একই সঙ্গে সিইএসসি-তে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বও সামলান। এই দ্বৈত ভূমিকা আদৌ নীতিসঙ্গত কি না—সেই প্রশ্ন তুলে বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার (আজ) সেই মামলার শুনানি নির্ধারিত, আর তা ঘিরেই রাজনৈতিক মহলে নতুন করে শুরু হয়েছে অন্দরকলহের জল্পনা—তৃণমূলেরই কোনও অংশ কি পরোক্ষে মদত দিচ্ছে এই আইনি লড়াইকে?
কে তুললেন প্রশ্ন?
সিইএসসি–তে সম্প্রতি একটি নতুন শ্রমিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। এই সংগঠনের অধিকাংশ সদস্যই একসময় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরাই শোভনদেবের ‘স্বার্থের সংঘাত’ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের যুক্তি—রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হয়েও একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার ইউনিয়নের সভাপতির পদে থাকা অনৈতিক ও প্রশ্নসাপেক্ষ।
মামলাটি হাইকোর্ট গ্রহণ করেছে এবং শুক্রবারই শুনানির দিন।
শোভনদেবের অবস্থান
শোভনদেবের তরফে তাঁর আইনজীবী আদালতে হাজির হবেন। তাঁদের দাবি, শোভনদেব বহু বছর ধরে সিইএসসি-র কর্মী ইউনিয়নের সভাপতি। অতীতেও একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের শীর্ষ পদে ছিলেন। ফলে মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা অসাংবিধানিক নয়। আইনজীবীর বক্তব্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূতভাবে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্দরের চাপানউতোর?
সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্য তৈরি করছে এই প্রশ্ন—শাসকদলের ভিতর থেকেই কি শোভনদেবের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জে ইন্ধন জোগানো হচ্ছে?
কারণ—
নতুন সংগঠন গড়া কর্মীদের বেশিরভাগই তৃণমূলের পুরনো শ্রমিক সংগঠনের সদস্য ছিলেন।
তাঁরা দল ছেড়ে নতুন সংগঠন গঠনের পরই হঠাৎ কেন হাইকোর্টে গেলেন, তা নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য এই মামলার বিষয়ে এখনো কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এখন নজর হাইকোর্টে
শুক্রবারের শুনানিতে আদালত কী অবস্থান নেয়, তা-ই এখন রাজনৈতিক মহলের নজরে। এই মামলার রায় শুধু শ্রমিক সংগঠনের রাজনীতি নয়, শাসকদলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
