আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বসেছিলেন বাম নেতা এবং রাজ্য সভাপতি মহম্মদ সেলিম (Selim)। তার সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন সিপিএম যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জী। বৈঠকের শুরুতেই তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করলেন সেলিম। প্রথমেই তার বক্তব্যে স্থান পায় মেরুকরণের রাজনীতি। নিশানা বিজেপি।
তিনি বলেন “এই রাজ্যে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করেছে।” “আমাদের বাংলায় রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হতে পারে কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি কখনো হয়নি। বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়েই এই মেরুকরণের খেলায় মেতে উঠেছে।” এর পরেই তিনি সরব হন বাংলা ও বাঙালি দের নিগ্রহ, বিশেষ করে ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে বাঙালি নিপীড়ণের বিরুদ্ধে।
সেলিম তার বক্তব্যে স্পষ্ট বলেন “বাঙালিরা আজ বাংলার বাইরে নিরাপদ নয়। বাংলায় কথা বললেই বিজেপি তাদের অত্যাচার করছে।” তিনি আরও বলেন “আজ স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে যে জাতি সবচেয়ে বেশি দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, বুকের রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে আজ তারাই সর্ব জায়গায় ব্রাত্য।” বিজেপি সব জায়গায় অনুপ্রবেশকারী এবং রোহিঙ্গা দেখতে পাচ্ছে বলেও নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করেন সেলিম।
তিনি বলেন “সংবিধানেও দেশের সর্ব ধর্ম ঐক্যের কথা বলা আছে কিন্তু বিজেপি সংবিধান পরিবর্তন করে দিতে চায়।” আজ বর্ণ বৈষম্য দেশ জুড়ে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে অনেক বেড়েছে বলে দাবি করছেন সেলিম। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করছেন এই বাংলাতেও বর্ণবৈষম্যের বীজ পুঁতে দিতে বদ্ধপরিকর বিজেপি।
তার এই বক্তব্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ও। রাজনৈতিক মহলের একাংশ সেলিম কে সমর্থন করলেও বিজেপি সমর্থিত মহল কিন্তু বলছে সেলিম সিপিএমের অস্তিত্ব বাঁচাতে এখন তৃণমূলের দ্বারস্থ। তাই তাদের হয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করে গেলেন।
তারা আরও বলছেন এই রাজ্যে সিপিএমের কি অস্তিত্ব আছে প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাওয়া একটি দল তারা নিজেদের মান বাঁচাতে এখন শাসকের গুণগান করতে চাইছে। স্বভাবতই সেলিমের বক্তব্যে কিছুটা খুশি ঘাসফুল শিবির কারণ এতদিন তৃণমূল এবং মমতা বন্দোপাধ্যায় এই মেরুকরণ এবং বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন।
কেন্দ্রের কাছে ৪৫৬৩ কোটি টাকার দাবি তুলে ফের হাই কোর্টে রাজ্য
এখন সেলিম সবুজ সুরে সুর মেলাতেই তির্যক হাসি হাসতেই পারেন তারা। তবে সেলিমের বক্তব্যের ভবিষ্যৎ কি হবে এবং বিজেপির দাবি কি সত্যি তা সময় ই বলবে এবং বলবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মানুষের রায়। তবে সমোলোচকরা আশঙ্কা করেছেন যে তৃণমূলী সুরে কথা বললেই কি নির্বাচনে নিজেদের অবস্থানের কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারবে বামেরা। তারাও কি প্রমান করবে শূন্য শুধু শূন্য নয়।