রূপনারায়ণ নদীর তীরে গড়ে ওঠা কংক্রিটের বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে আচমকাই কংক্রিটের ওই বাঁধের এক বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, প্রায় ১০০ ফুটের বেশি কংক্রিটের ঢালাই বাঁধ ধসে পড়েছে। ঘটনার জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে। আচমকা কংক্রিটের বাঁধে গর্জনের মতো আওয়াজ শোনা যায়। স্থানীয়রা দৌড়ে গিয়ে দেখেন, বাঁধের এক বড় অংশ ইতিমধ্যেই নদীর জলে তলিয়ে গেছে। নদীর প্রবল স্রোত এবং পাড় ভাঙনের কারণে এই বিপর্যয় বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। বাঁধের ধসে যাওয়ার ফলে শুধু রাস্তাঘাট নয়, পাশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিও রয়েছে চরম ঝুঁকির মধ্যে। ইতিমধ্যেই অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গিয়েছেন। বাঁধের পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ কার্যত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
শুক্রবার সকালে সেচ দপ্তরের একাধিক আধিকারিক ভাঙনস্থল পরিদর্শনে যান। তাঁরা পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত অংশের জরুরি মেরামতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। আধিকারিকদের মতে, নদীর জলের অতিরিক্ত চাপ এবং বাঁধের পুরনো কাঠামো এই ধসের প্রধান কারণ হতে পারে।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই বাঁধটি দুর্বল হয়ে পড়ছিল। বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও সময়মতো সংস্কার হয়নি বলেই আজ এই বিপর্যয়। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বারবার বলার পরেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা বহুবার জানিয়েছি বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে, কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেয়নি। আজ এই বিপর্যয় ঘটেছে। বর্ষার সময় এটা আরও ভয়াবহ হতে পারত।”
ভাঙনের ফলে নদী পারের চাষজমিতে জল ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপৎকালীন ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি, পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয়, তার জন্য বাঁধের দুর্বল জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিকভাবে সংস্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।