এক ধাক্কায় মিনিকেট চালের দাম বেড়ে ১০০ টাকা কেজি! হাসি নেই মধ্যবিত্তের

পশ্চিমবঙ্গে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ভাতের অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। বাঙালি পরিবারের প্রতিদিনের খাবারের অন্যতম প্রধান উপাদান হল চাল। তবে, সম্প্রতি চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা…

Rice Prices

পশ্চিমবঙ্গে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ভাতের অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। বাঙালি পরিবারের প্রতিদিনের খাবারের অন্যতম প্রধান উপাদান হল চাল। তবে, সম্প্রতি চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে মিনিকিট, বাঁশকাঠি, গোবিন্দভোগসহ অন্যান্য চালের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে, যা মধ্যবিত্তের জীবনে নেমে এসেছে এক কঠিন সময়।

বর্তমানে, পূর্ব বর্ধমান জেলার মতো কৃষিপ্রধান এলাকায় চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা অবাক এবং চিন্তিত। অনেক ক্রেতাই অভিযোগ করেছেন যে, তারা যে মিনিকিট চাল কিনতেন, সেটি এখন ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি হয়ে গিয়েছে। এছাড়া, রত্না চালের দাম ৪৩ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা কেজি, বাঁশকাঠি চালের দাম ৭২ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি, এবং গোবিন্দভোগ চালের দাম ৮৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি হয়ে গিয়েছে। এক কথায়, সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে বেশ হারে।

   

বাজারের এই অস্থিরতায় ক্রেতারা অত্যন্ত সমস্যায় পড়েছেন। রাইস মিলাররা এবং আড়তদাররা বলেন, চালের দাম এভাবে হঠাৎ বেড়ে যাওয়াটা তারা ঠিকভাবে বুঝতে পারছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা অনেক সময় ক্রেতাদের কটু কথা শোনেন, কারণ মূল্যবৃদ্ধির পেছনের কারণ সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। বাজারে ক্রমাগত দাম বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভও বাড়ছে।

কিছু ব্যবসায়ী এবং কৃষক নেতারা মনে করছেন যে, চালের দাম বাড়ানোর পেছনে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থাকতে পারে। সিপিএমের কৃষক সভার রাজ্য সভাপতি অমল হালদার বলেন, কিছু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নিজেদের মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে, তিনি সরকার এবং প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন যেন তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

অন্যদিকে, বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, কৃষকরা যদি ধানের দাম বেশি পান, তাতে তাদের ক্ষতি হবে না। তার মতে, নতুন চাল বাজারে উঠলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে আসবে। তবে, ক্রেতারা জানাচ্ছেন যে তারা আর কতদিন এই অস্বাভাবিক দাম সহ্য করবেন, তা নিয়ে অনিশ্চিত।

পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে এবং বিষয়টির উপর নজর রাখছে। জেলা প্রশাসকের মতে, তারা দ্রুত এই পরিস্থিতির সমাধান করবেন এবং চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করবেন। তবে, সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিস্থিতি সহ্য করা এখনই সহজ নয়। বিশেষ করে যারা দৈনন্দিন জীবনের জন্য চাল কিনেন, তাদের কাছে এই মূল্যবৃদ্ধি ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে।

সুতরাং, চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে একদিকে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, তবে সাধারণ মধ্যবিত্ত ক্রেতারা এই দামের উর্ধ্বগতি নিয়ে এক গভীর সংকটে পড়েছেন। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ এবং ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীলতা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।