Rampurhat Files: বগটুই গণহত্যায় ধৃত আনারুল প্রকাশ্যে ‘মুখ খুললেই বিপদ ছিল’

একেবারে ঝড়ের মতো অপারেশন সাকসেসফুল। বীরভূম জেলা পুলিশ যার খোঁজই পাচ্ছিল না, সেই আনারুল হোসেন হঠাৎ ধরা পড়ে গেল! মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমে ঢুকে বগটুই গণহত্যার গ্রামে…

একেবারে ঝড়ের মতো অপারেশন সাকসেসফুল। বীরভূম জেলা পুলিশ যার খোঁজই পাচ্ছিল না, সেই আনারুল হোসেন হঠাৎ ধরা পড়ে গেল! মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমে ঢুকে বগটুই গণহত্যার গ্রামে গিয়ে আনারুলকে বেঁধে আনতে বললেন। পুলিশ আর দেরি করেনি।(Rampurhat Files)

আনারুল হেসেনকে গ্রেফতারির পর ফের বিতর্ক। কারণ, সোমবার রাতে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গণহত্যার পর থেকে নিহতদের আত্নীয়রা আনারুলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। আর অভিযুক্ত আনারুল সংবাদ মাধ্যমে নিজের পক্ষে যুক্তি দিয়ে যায় প্রকাশ্যে। অভিযোগ তখন পুলিশ ছিল নীরব। মুখ্যমন্ত্রী বগটু়ই গ্রামে গিয়ে নির্দেশ দিতেই ধরা পড়ে গেল আনারুল হোসেন। তাকে তারাপীঠের একটি হোটেলের কাছ থেকে ধরা হয়। মোবাইল টাওয়ার দেখে পুলিশ আনারুলের ‘লোকেশন’ চিহ্নিত করে।

বগটুই গণহত্যা আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও বালি পাথর খাদান থেকে চোরাচালানের বখরা নিয়ে গণ্ডোগোলের ফল। গণহত্যার পরপরই এই দাবি করে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। আর বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি ছিল, বগটুই গ্রামের ঘটনা শর্টশার্কিট থেকে ঘটেছে। পরে তীব্র বিতর্কের মাঝে তিনি মু়খ বন্ধ করেন। গ্রামবাসীদের একাংশ বলছে, অনুব্রত মণ্ডলের শাস্তি চাই।

কেন অনুব্রতর মণ্ডলের শাস্তি চান বগটুই গ্রামের বাসিন্দারা ? এখান থেকেই উঠে আসছে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীবাজি ও অনুব্রত ‘অনুগ্রহ’ রাজনীতি।

বগটুই গ্রামের কাছে বোমা মেরে খুন করা হয় ভাদু শেখকে। তার মৃত্যুর পর সোমবার রাতে গণহত্যা সংঘটিত হয়। দশ জন মৃত। ভাদু শেখ যেমন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও স্থানীয় পঞ্চায়েত উপপ্রধান। তেমনই অন্য গোষ্ঠীর নেতা আনারুল হোসেন। সে স্থানীয় ব্লক তৃণমূল সভাপতি।

রামপুরহাটের সন্ধিপুর এলাকার বাসিন্দা আনারুল হোসেন আগে ছিল রাজমিস্ত্রি ও কংগ্রেস সমর্থক। পরে টিএমসিতে যোগ দেয়। তার সাংগঠনিক ক্ষমতায় চমকে যান দলটির জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আনারুল পায় ব্লকের দায়িত্ব। এখান থেকেই রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক। হেভিওয়েট টিএমসি নেতা হতে বেশি সময় লাগেনি আনারুলের।

অভিযোগ, বালি ও পাথর খাদানের বখরার ভালো অংশ পকেটে ঢুকত আনারুলের। বিপুল রোজগারের ফল প্রাসাদের মতো বাড়ি। রাজমিস্ত্রি থেকে কোটিপতি রাজনীতিক আনারুলের কাছেই আছে ‘সবার গোপন কথার সংগ্রহ’। যদি তার মুখ খুলে যায়!

আনারুলের দায়িত্বে থাকা এলাকার মধ্যেই পড়ে বগটুই গ্রাম। সেখানকার সব গ্রামবাসীরা বলছেন, কেউ কিছু দেখেছি। আর গোপনে কয়েকজন বলছেন আনারুল সব জানে। নিহতদের পরিবারগুলির দাবি, আনারুল হামলা করিয়েছিল। তার সঙ্গে পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখের দূরত্ব ছিল। ‘ভাদু সবাইকে দিয়ে খেত’। আনারুল জমি হারাচ্ছে মনে করেই হামলা করায়। কী দিত ভাদু? কেউ বলতে চান না।

গণহত্যার পর থেকে আনারুল শেখ বারবার সংবাদ মাধ্যমে এসে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। অভিযোগ, জেলা টিএমসি নেতাদের বখরা রাজনীতির ঠিকুজি রাখা আনারুল এরপর সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুললেই বিপদ ছিল তৃ়নমূল কংগ্রেসের। সে এখন গলার কাঁটা।