প্রয়াত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। মার্চ মাসের শুরু থেকেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাত ৮টা ১৪ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শতম অধ্যক্ষ। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি মূত্রনালিতে সংক্রমণের কারণে তাঁকে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে মার্চের শুরু থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘বিদায় প্রবীর মজুমদার’, প্রয়াত ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলা অন্যতম সেরা লিফটব্যাক
এর আগে ২০২২ সালের মার্চ মাসেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে সে সময় চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। চলতি বছর পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দীর্ঘ চিকিৎসার পর মঙ্গলবার রাতে প্রয়াত হন স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ।
প্রসঙ্গত, ১৯২৯ সালে তামিলনাডুর তাঞ্জাভুর জেলার আন্দামি গ্রামে জন্ম তাঁর। ২০ বছর বয়সে মুম্বই রামকৃষ্ণ আশ্রমের মাধ্যমে শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবধারার সংস্পর্শে আসেন এবং ১৯৫২ সালে ২২ বছর বয়সে মুম্বই আশ্রমে যোগদান করেন তিনি। এরপর রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সপ্তম সঙ্ঘগুরু স্বামী শঙ্করানন্দজি মহারাজের কাছে মন্ত্রদীক্ষা লাভ করেন তিনি। শঙ্করানন্দজি মহারাজের কাছেই ১৯৫৬ সালে ব্রহ্মচর্য সংস্কার এবং ১৯৬০ সালে সন্ন্যাস সংস্কার লাভ করেন স্মরণানন্দ মহারাজ।
আরও পড়ুন: প্রয়াত অ্যাড্রু সাইমন্ডসের সন্তানের কথা শুনলে আপনার মুখেও হাসি ফুটবে
তিনি মুম্বই রামকৃষ্ণ আশ্রম, অদ্বৈত আশ্রম (মায়াবতী ও কলকাতা), রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ, চেন্নাই রামকৃষ্ণ মঠে সেবারত ছিলেন। এছাড়া তিনি কিছুকাল অদ্বৈত আশ্রম থেকে প্রকাশিত মাসিক ইংরেজি পত্রিকা ‘প্রবুদ্ধ ভারত’-এর সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
১৯৮৩ সালে রামকৃষ্ণ মঠের অছি ও রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালন সমিতির সদস্য হন তিনি এবং ১৯৯৫ সাল থেকে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদক এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ সাল থেকে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সঙ্ঘগুরু তথা সহ-সঙ্ঘাধ্যক্ষ হিসেবে অসংখ্য মানুষকে মন্ত্রদীক্ষা প্রদান করেছেন। তাঁর এই আকস্মিক প্রয়াণে শোকবিহ্বল অনুগামী এবং ভক্তবৃন্দরা।