পুলিশি অভিযানে উদ্ধার বাজি-সহ ৭৫ কেজি কাঁচামাল

মিলন পণ্ডা, কাঁথি: অবৈধ বাজি কারবারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করল কাঁথি থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে শনিবার রাতে কাঁথি শহরের সাতমাইল এলাকায়…

পুলিশি অভিযানে উদ্ধার বাজি-সহ ৭৫ কেজি কাঁচামাল

মিলন পণ্ডা, কাঁথি: অবৈধ বাজি কারবারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করল কাঁথি থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে শনিবার রাতে কাঁথি শহরের সাতমাইল এলাকায় এক বিশেষ অভিযান (Police Raid) চালিয়ে একটি গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ বাজি ও বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া বাজির ওজন প্রায় ৭৫ কেজি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত কয়েকদিন ধরেই। কাঁথি থানার পুলিশ বিভিন্ন মহল থেকে খবর পাচ্ছিল যে সাতমাইল বাজার সংলগ্ন একটি গুদামে অবৈধভাবে বাজি মজুত করা হচ্ছে এবং সেখানে বাজি তৈরির কাজও চলছে। এই তথ্য যাচাই করে দেখতে শনিবার সন্ধ্যায় টাউন অফিসার প্রণব বেরা-র নেতৃত্বে কাঁথি থানার একটি পুলিশ দল ওই এলাকায় হানা (Police Raid) দেয়।

   

পুলিশ হানা দিতেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় গোডাউনের মালিক ও তার সহযোগীরা। পুলিশ গোটা গোডাউন ঘিরে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৭৫ কেজি বাজি, নানা ধরনের কেমিক্যাল, কাগজ, সুতলি এবং বাজি তৈরির যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করে। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে বেশ কিছু শক্তিশালী শব্দবাজি ও আতসবাজিও রয়েছে।

টাউন অফিসার প্রণব বেরা জানান, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত অভিযানে যাই। গোডাউনটি দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহার করা হচ্ছিল বাজি তৈরি ও মজুতের কাজে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বাজির পরিমাণ ও মান দেখে বোঝা যাচ্ছে এটি একটি বড় চক্রের কাজ।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গোডাউনের আশেপাশের এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই বাজি ফাটার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এলাকাবাসীরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই ধরনের দাহ্যবস্তু মজুত করে রাখায় বড় ধরনের বিপদের সম্ভাবনা ছিল।

Advertisements

একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা অনেকবার পুলিশকে জানিয়েছিলাম। আজকে তারা এসে ব্যবস্থা নিয়েছে দেখে আমরা খুশি। এভাবে বাজি বানানো আর মজুত করলে এখানে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটতে পারত।”

এদিকে কাঁথি থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাজেয়াপ্ত সামগ্রী ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। অভিযুক্তদের ধরতে একাধিক জায়গায় হানা চলছে। গোডাউন মালিক ও চক্রের অন্যান্য সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি মহকুমা একাধিকবার অবৈধ বাজি কারবারের কারণে শিরোনামে এসেছে। এবারের অভিযান সেই কারবারকে ধাক্কা দিলেও পুলিশ মনে করছে, পুরো চক্রটি ভাঙতে গেলে লাগাতার নজরদারি ও আরও বড়সড় অভিযান চালাতে হবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে আহ্বান জানানো হয়েছে, কোথাও যদি এই ধরনের অবৈধ বাজি তৈরির খবর পাওয়া যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানাতে।