কলকাতা: আজ রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল চাকরিহারাদের বিক্ষোভ। কর্মহীন হওয়া প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারার প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসে। তাঁদের দাবি, প্রশাসন তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দিতে বাধ্য। কিন্তু প্রশাসনের সাড়া না পাওয়ার পর, আজ মুরারইয়ে ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জের শিকার হন তাঁরা। এর ফলে সারা রাজ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
২৬ হাজার চাকরিচ্যুত, ক্ষোভের আগুনে তুঙ্গে Police lathi charge on jobless teachers
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এক লহমায় চাকরিচ্যুত হন প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারা। এই চাকরিচ্যুতির পর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসেও কোনরকম আশ্বস্ত হননি তারা। প্রশাসনের তরফে দেয়া স্বেচ্ছাশ্রমের পরামর্শে ক্ষোভ আরো বাড়ে। এর পর বুধবার রাজ্যজুড়ে ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন চাকরিহারা। মুরারইয়ে এই কর্মসূচির সময় পুলিশ বাধা দেয়, এবং শুরু হয় ধস্তাধস্তি। পুলিশের টেনে হিঁচড়ে চাকরিহারাদের সরানোর চেষ্টা করে, এতে বেশ কয়েকজন চাকরিহারা পড়ে যান এবং লাঠির আঘাতে আহত হন।
পুলিশি নির্যাতন, মহিলাদেরও লাঠিচার্জের অভিযোগ Police lathi charge on jobless teachers
প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ করেন যে, পুলিশ তাদের উপর অতর্কিত লাঠিচার্জ করেছে। শুধু পুরুষদেরই নয়, মহিলাদেরও লাঠির আঘাত সহ্য করতে হয়েছে। এক চাকরিহারা জানিয়েছেন, “আমরা যদি অস্ত্র নিয়ে আসতাম, তাহলে কি পুলিশ লাঠি নিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ করত? এটা নিছক অত্যাচার।” বেশ কয়েকজন প্রতিবাদী নিজেদের অবস্থানে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানান এবং এক চাকরিহারা অচৈতন্য হয়ে পড়েন।
ঘুষের অভিযোগ, ক্ষোভের শিখা Police lathi charge on jobless teachers
চাকরিহারা অভিযোগ করেছেন, তাদের চাকরি প্রক্রিয়া এবং ভেরিফিকেশনের সময় পুলিশ ঘুষ দাবি করেছে। তারা বলেন, “ভেরিফিকেশনের সময় আমরা ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিয়েছি। এখন তো ২ টাকা ঘুষের যোগ্য হয়ে গেছি!” এক চাকরিহারা প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়ে পাঁচশো টাকার নোট হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাদের দাবি, “পুলিশ যদি ঘুষ নিতেই পারে, আমরা কেন ঘুষ দিতে পারব না?”
শিক্ষকদের অভিযোগ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা Police lathi charge on jobless teachers
বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষক অনিশ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমরা শিক্ষক, কিন্তু আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। ছাত্রদের চোখে চোখ রাখতে পারছি না।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “এত ভিডিও ফুটেজ আসছে, কিন্তু কোথাও আমরা সহিংস আচরণ করিনি।” প্রশাসনের কার্যকলাপ ও তাদের অবস্থান নিয়ে চাকরিহারাদের মধ্যে ক্ষোভের পারদ চড়ে গেছে।
পুলিশের উপস্থিতি ও অবস্থা Police lathi charge on jobless teachers
ঘটনার পর এলাকায় পুলিশী নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে এর পরেও পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রতিবাদকারীদের মধ্যে আরো তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়, এবং তারা আরও শক্ত অবস্থান নেন।
রাজ্যজুড়ে চাকরিহারাদের প্রতিবাদ এবং পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা রাজনীতির অঙ্গনে নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চাকরিহারাদের দাবি শুধু চাকরি নয়, বরং তাদের যোগ্যতার মর্যাদা এবং প্রশাসনের দায়িত্বশীলতা। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কী পদক্ষেপ নেয়।
West Bengal: Statewide protests erupt in West Bengal as 26,000 laid-off individuals demand jobs. Police action during a gherao in Murarai sparks outrage. Supreme Court’s orders and Mamata Banerjee’s assurance fail to pacify.