এক পুলিশ কর্মীর (Police Body) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে নদিয়ায়। বুধবার সকালে মায়াপুর পুলিশ ফাঁড়ির ব্যারাক থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয়। মৃতের নাম দেবাশিস গড়াই। তিনি মায়াপুর পুলিশ ফাঁড়িতে এএসআই পদে কর্মরত ছিলেন। এই ঘটনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। আত্মহত্যা কি না, নাকি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে সহকর্মীরা দেবাশিস গড়াইয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। প্রথমে তারা স্থানীয় মায়াপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ ইতিমধ্যেই দেহটি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
দেবাশিস গড়াই বীরভূম জেলার নানুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। চার-পাঁচ মাস আগে তিনি মায়াপুর পুলিশ ফাঁড়িতে যোগ দেন। পরিবারে তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে। জানা গেছে, মৃত পুলিশ কর্মীর মেয়ে এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এমন একটি সময়েই তিনি জীবনের বড় পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছিলেন, যখন তার বাবা এভাবে মারা গেলেন।
ঘটনার পরই মৃতের (Police Body) পুলিশ কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ব্যারাকে পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। পরিবারের লোকজন শোকাহত। তাদের কাছে আত্মহত্যার কোনো কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ এর পেছনে কোনো বিশেষ কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি। পুলিশ মনে করছে, দেবাশিস গড়াই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। পরিবারে কিছু সমস্যা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, তদন্তের পরই জানা যাবে, এই ঘটনা আত্মহত্যা ছিল, নাকি অন্য কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। দেবাশিস গড়াইয়ের সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, তিনি কাজে এসে তেমন কিছু অস্বাভাবিক আচরণ করেননি। তবে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনো খোলামেলা তথ্য নেই। এটি একটি বড় রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, পুলিশের পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। দেবাশিস গড়াইয়ের মৃত্যুর পর পরিবার ও সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় এলাকাতেও এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে।
এই ঘটনাটি পুলিশের ভিতরের অনুশীলন এবং কর্মস্থলে চাপ নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পুলিশ কর্মীদের মানসিক চাপ এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আরও সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। পুলিশ আশা করছে, দ্রুত সঠিক কারণ সামনে আসবে। এদিকে, নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ।