মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ চান শুভেন্দু, ইভিএমে ঝাঁটা দিয়ে তাড়া করার ডাক

মিলন পণ্ডা, পাঁশকুড়া: পাঁশকুড়া শীতলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর উপর নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ল বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা…

মিলন পণ্ডা, পাঁশকুড়া: পাঁশকুড়া শীতলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর উপর নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ল বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Shuvendu Adhikari) নেতৃত্বে বিশাল পথযাত্রা ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসমাগমে উত্তাল হয়ে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুর।

নারান্দা হনুমান মন্দির থেকে পথযাত্রা শুরু করে মিছিল পৌঁছয় শীতলপুর হাসপাতাল পর্যন্ত। মিছিলে হাজার হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থক পা মেলান। বহু মহিলা ঝাঁটা হাতে মিছিলে অংশ নিয়ে প্রতিবাদের বার্তা দেন। উপস্থিত ছিলেন উত্তর কাঁথির বিধায়ক সুমিতা সিহনা সহ জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব।

   

সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী তীব্র আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “এই নৃশংস ঘটনার একমাত্র দায়ী তৃণমূল সরকার। জাহিদ আব্বাস নামের অভিযুক্ত তৃণমূলের আশীর্বাদপুষ্ট নেতা। সে হাসপাতালের প্যাসিলিটি ম্যানেজার হলেও কার্যত অলিখিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিল। তার দাদাও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাত। গোটা পরিবার স্বাস্থ্য ব্যবসা দখল করে রেখেছিল।”

তিনি আরও বলেন, “দফা এক, দাবি এক— মমতার পদত্যাগ চাই। জাহিদ আব্বাসের ফাঁসি চাই। আমরা শীঘ্রই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করব।”

শুভেন্দু অধিকারী শাহজাহান কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “যেভাবে সন্দেশখালির শাহজাহান তৃণমূলের প্রশ্রয়ে অপরাধের জাল বিস্তার করেছিল, জাহিদ আব্বাসও তেমন অপরাধ সাম্রাজ্য তৈরি করেছে। শাহজাহানকে যেমন প্যাকেট করা হয়েছে, আব্বাসের বিরুদ্ধেও তেমন ব্যবস্থা নিতে হবে।”

Advertisements

তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করতেন। তবে আমি জানি, উনি পদত্যাগ করবেন না। উনি হেরে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাই বাংলার মানুষকে ইভিএমে ঝাঁটা মেরে তাড়াতে হবে।”

বিজেপি নেতৃত্বদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একাধিক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে, এবং সরকারের উদাসীনতার কারণে অপরাধীদের দাপট বাড়ছে। তারা দাবি করে, গত কয়েক মাসে একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী হয়রানির শিকার হয়ে কাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তীব্রভাবে উত্তপ্ত। বিজেপি মনে করছে, এই ইস্যুতে গোটা বাংলায় মানুষের ক্ষোভ একত্রিত হয়েছে এবং তারা ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলনে নামবে। শাসক দল অবশ্য এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই খারিজ করছে।

তবে পাঁশকুড়ার সাধারণ মানুষ মনে করছে, এই ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরছে। নির্যাতিতার পরিবার দ্রুত ন্যায়বিচার পাক, এটাই এখন সাধারণ মানুষের একমাত্র দাবি।