ধর্ম নয়, শিল্পই ভরসা ইসমাইল পরিবারের জীবিকার পথ

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: কথায় বলে “মোরা একই বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু – মুসলমান, হিন্দু যাহার নয়নমনী, মুসলিম তাহার প্রাণ! ভারতবর্ষ নানা সংস্কৃতির দেশ। রবীন্দ্রনাথ…

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: কথায় বলে “মোরা একই বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু – মুসলমান, হিন্দু যাহার নয়নমনী, মুসলিম তাহার প্রাণ! ভারতবর্ষ নানা সংস্কৃতির দেশ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বাংলাও সম্প্রীতির বাংলা। তাই এই বাংলায় প্রত্যেকটি জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে মেতে উঠেন শারদীয়ার উৎসবে (Durga Puja)।

সামনেই শারদীয়ার পুজোর মরসুম, ব্যস্ত এখন শিল্পীপাড়া! কেউ মূর্তি তৈরি করতে, তো কেউবা আবার সাজসজ্জা ও পটচিত্র তৈরিতে। তবে শুধুমাত্র যে হিন্দু শিল্পীরাই, মা দুর্গাদেবী সহ বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি তৈরি করেন এমনটা কিন্তু নয়! মুসলিম ধর্মের মানুষ হয়েও সারা বছর ধরে হিন্দুদের দেব-দেবীর মূর্তি বানিয়ে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ব্লকের নাড়াজোল গ্রামের ইসমাইল চিত্রকর।

   

Advertisements

বর্তমানে বড় প্রতিমার থেকেও ছোট ছোট লক্ষ্মী প্রতিমা, বিশ্বকর্মা, শ্যামা কালী ও বিভিন্ন পটচিত্র সব বিভিন্ন ধরনের মূর্তি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বাইরের রাষ্ট্র নেপালেও পাড়ি দেন। তবে ধর্ম কোন তাদের কাজে সমস্যা তৈরি করে না বলেও জানান ইসমাইল চিত্রকরের পরিবার। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ইসমাইল চিত্রকর এবং তার দুই মেয়ে হাসিনা ও আসপিয়া বাবার কাজে সহযোগিতা করতে করতে আজ নিজেরাও এটাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছে।

তাঁরা বলেন, ‘‘দাদুর আমল থেকেই এই পেশা আমাদের পরিবারে চলে আসছে, তাই আমরাও এটাকেই আমাদের জীবিকা হিসেবেই নিয়েছি।’’ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই ইসমাইল বাবু ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন ধরনের মূর্তি তৈরি করতে। তবে এই বছর পূজোয় অনেক অর্ডার আশায় একদিকে যেমন কাজের চাপ রয়েছে, তেমনি অন্যদিকে তারা খুশিও বটে। এভাবেই কয়েক কয়েক দশক ধরে নাড়াজলের ইসমাইল চিত্তকরের পরিবার পুজোর সময় বিভিন্ন ধরনের মূর্তি তৈরি করে উপহার দিয়ে আসছে বাংলার মানুষকে।