মমতা নয়, অন্য কেউ করবে শহিদ দিবস: দিলীপ

২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যখন রাজ্য জুড়ে তুঙ্গে উত্তেজনা, তখন মুখ খুললেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।…

মমতা নয়, অন্য কেউ করবে শহিদ দিবস: দিলীপ

২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যখন রাজ্য জুড়ে তুঙ্গে উত্তেজনা, তখন মুখ খুললেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সোমবার সকালে বিস্ফোরক মন্তব্য করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘এটাই তৃণমূলের শেষ শহিদ দিবস। এরপর তৃণমূলই শহিদ হবে।’’ তাঁর এই মন্তব্যে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিঘায় জগন্নাথ ধাম কালচারাল সেন্টারের উদ্বোধনে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই সময় দিলীপ ঘোষের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। যদিও গত সপ্তাহে দলের সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকের পর সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে দেন দিলীপবাবু। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি বিজেপিতেই আছেন এবং থাকবেন।

   

এই প্রেক্ষাপটে ২১ জুলাইয়ের দিনেই খড়গপুরে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি সভার আয়োজন করে বিজেপি। দিলীপ ঘোষের উদ্যোগে গিরি ময়দানে এই পালটা কর্মসূচির আয়োজন হয়েছে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে একের পর এক কটাক্ষে বিদ্ধ করেন তিনি।

দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদ দিবসটাকে ডিম্ভাত দিবস বানিয়ে ফেলেছেন। এবার যা পরিস্থিতি, মনে হচ্ছে ২৬ সালের নির্বাচনের পর তৃণমূল আর এই শহিদ দিবস করার মতো অবস্থায় থাকবে না। তৃণমূলের মঞ্চ থেকে আর শহিদ দিবস পালন হবে না। অন্য কেউ করবে। আসল শহিদরা কংগ্রেসের ছিল। তাঁদের তৃণমূল লুঠ করেছে। আজকের তৃণমূল নেতারা লুঠ করছে মানুষের সম্পত্তি, সম্মান, শহিদের উত্তরাধিকার পর্যন্ত। তৃণমূল লুঠের পার্টি হয়ে উঠেছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যাঁরা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের প্রতি সম্মান জানানো যেকোনও দলের পক্ষে সম্ভব। শহিদদের নামে তৃণমূল ভোটের রাজনীতি করছে। বাংলা ও বাঙালির আবেগ নিয়ে খেলছে।’’

Advertisements

তৃণমূল কংগ্রেস এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের তরফে নেতারা দাবি করেছেন, দিলীপ ঘোষ রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তাই এই ধরনের বেফাঁস মন্তব্য করে তিনি ফের লাইমলাইটে আসতে চাইছেন।

তবে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য ও কর্মসূচিকে ঘিরে যে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে মেরুকরণ শুরু হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি যে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিগুলিতে ফের পা রাখার চেষ্টা করছে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে দিলীপ ঘোষের এই পদক্ষেপে।

খড়গপুরের সভায় বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব ছাড়াও জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। দিলীপবাবুর ভাষণ চলাকালীন বেশ কয়েকবার করতালি ও স্লোগানে ভরে ওঠে গিরি ময়দান।

তৃণমূলের শহিদ দিবস বনাম বিজেপির শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি সভা — এই দ্বৈরথ আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে আরও কী প্রভাব ফেলে, এখন সেদিকেই নজর রাজ্যবাসীর।