শিলিগুড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে এক মহিলা পুলিশ কর্মীর (Siliguri police) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বুধবার রাতে পিঙ্ক মোবাইল পেট্রোলিং ভ্যানে ডিউটি চলাকালীন ওই মহিলা পুলিশ কর্মী দুই নাবালক-নাবালিকাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনা ঘিরে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়, যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখান।
ঘটনাটি কীভাবে ঘটল?
বুধবার রাতে শিলিগুড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে একটি স্কুল মাঠে এক নাবালক ও নাবালিকা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে গল্প করছিল। এসময় পিঙ্ক মোবাইল পেট্রোলিং ভ্যানের টহল শুরু হয়, যা শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের মহিলাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ। হঠাৎ করে ওই পেট্রোলিং ভ্যানে থাকা মহিলা পুলিশ কর্মী কোনও কারণ ছাড়াই দুই নাবালক-নাবালিকাকে মারধর শুরু করেন।
স্থানীয়দের ক্ষোভ এবং বিক্ষোভ
ঘটনাটি দেখে স্থানীয়রা প্রচণ্ড ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং মহিলা পুলিশ কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিনা জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই নাবালক-নাবালিকাকে নিগ্রহ করা হয়েছে। নাবালিকার মা-ও জানান যে, তাঁর মেয়ে ও তার বন্ধুকে অন্যায়ভাবে আঘাত করা হয়েছে, এবং মহিলা পুলিশ কর্মী ডিউটির সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ করেন।
নাবালক ও নাবালিকার বক্তব্য
মারধরের শিকার নাবালক ও নাবালিকা জানায়, তারা শুধুমাত্র বন্ধু হিসেবে স্কুল মাঠে গল্প করছিল। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, কোনও ধরনের অশোভন আচরণ বা অন্যায় কিছু তারা করেনি। কিন্তু, হঠাৎ করেই পিঙ্ক মোবাইল ভ্যান থেকে মহিলা পুলিশ কর্মী নেমে এসে তাদের উপর আক্রমণ করেন।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনার পরপরই পুলিশের উর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, পুলিশের তরফে জানানো হয় যে অভিযুক্ত মহিলা পুলিশ কর্মীকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ডিউটি চলাকালীন পুলিশ কর্মীর এমন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
স্থানীয়দের দাবি
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি জানিয়েছেন যে, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনকে আরও সতর্ক হতে হবে। নাবালিকার মা অভিযুক্ত মহিলা পুলিশ কর্মীর কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ক্ষমতার অপব্যবহার না করে।
ঘটনাটি ঘিরে উত্তেজনা
শিলিগুড়িতে এমন ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিশেষ করে, শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পিঙ্ক মোবাইল পেট্রোলিং ভ্যানের পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন, যাদের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়ার, তারা যদি এমন আচরণ করে তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদে থাকবে?
এখন, শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ কতটা দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন করে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা দেখার বিষয়।