কলকাতা: শীতের প্রথম স্পর্শে ঢেকে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গে আজকের আবহাওয়া যেন একটা শান্ত, শুকনো ছবি আঁকছে। ভারতীয় আবহাওয়া অফিস (আইএমডি)-এর সর্বশেষ বুলেটিনে স্পষ্ট, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে সম্পূর্ণ শুকনো আবহাওয়া বিরাজ করবে, যখন দক্ষিণবঙ্গে বেশিরভাগ জায়গায় শুষ্কতাই রাজত্ব করবে। তবে কোস্টাল জেলাগুলিতে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, সবর্গ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা—একটা-আধটা দিন হালকা বৃষ্টি বা বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সপ্তাহের দ্বিতীয় অংশে (২১-২৭ নভেম্বর) এমনই ছবি, যা রাজ্যের কৃষক, যাত্রী এবং শহুরে জীবনকে কিছুটা স্বস্তি দেবে। কিন্তু শীতের এই শান্তিতে লুকিয়ে আছে কুয়াশার ছায়া, যা সকালের দৃশ্যমানতা কমিয়ে দিতে পারে।আইএমডির কলকাতা অফিসের একাধিক বুলেটিনে (২৬ নভেম্বর পর্যন্ত) বলা হয়েছে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি—দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, উত্তর ২৪ পরগনা—এ ‘মেইনলি ড্রাই’ থাকবে।
ইমরান আবহে পাক সেনাকে তুলোধোনা করল জামাত প্রধান
সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, যখন সর্বোচ্চ ২৫-২৮ ডিগ্রির কাছাকাছি। গত সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি ছিল, কোথাও ৩-৪ ডিগ্রি বেশি, কোথাও কম। আজও সেই ধারা অব্যাহত—কোনো বড় পরিবর্তন নেই। দার্জিলিংয়ের উচ্চভূমিতে সকালে হালকা কুয়াশা দেখা দিতে পারে, যা চা বাগানের শ্রমিকদের কাজে কিছুটা বাধা দেবে। কৃষকরা, যারা ধান কাটার শেষ পর্যায়ে আছেন, এই শুকনো আবহাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।
“বৃষ্টি না পড়লে ফসল নষ্ট হয় না, এই শীতকালীন শান্তি আমাদের পছন্দ,” বলছেন কোচবিহারের একজন কৃষক।দক্ষিণবঙ্গের কথা বলতে গেলে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, বীরভূমের মতো জেলাগুলিতে আজ আকাশ পরিষ্কার থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮-৩০ ডিগ্রি, সর্বনিম্ন ১৮-২০ ডিগ্রির মধ্যে। কিন্তু কোস্টাল অংশে যেমন ডায়মন্ড হারবার, কাঁথি, হালিশহর—একটা-আধটা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে বিকেল-সন্ধ্যায় বজ্রপাতসহ হালকা প্লাবন।
আইএমডির সপ্তাহিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় জেলায় ‘আইসোলেটেড রেইন/থান্ডারশাওয়ার্স’ হতে পারে কয়েকদিন। এর ফলে মৎস্যজীবীরা সতর্ক—সকালে জাল ফেলার পর বিকেলে আকাশ মেঘলা হলে নৌকা ভেড়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে আইএমডি। কলকাতার রাস্তায় সকালে হালকা কুয়াশা দেখা দিয়েছে, যা ট্রাফিককে ধীর করে দিয়েছে। অফিস যাওয়া কর্মীরা বলছেন, “শীতের এই শুরু ভালো লাগছে, কিন্তু কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কমলে গাড়ি চালানো কঠিন।”
আইএমডির একাধিক বুলেটিনে (যেমন ২৬ নভেম্বরের নর্থ বেঙ্গল ফোরকাস্ট) স্পষ্ট যে, আজ (২৭ নভেম্বর) সকাল ৮:৩০ থেকে পরদিন সকাল ৮:৩০ পর্যন্ত কোনো বড় ওয়ার্নিং নেই। উত্তরবঙ্গে ‘জেনারেলি ক্লিয়ার স্কাই’, দক্ষিণে ‘পার্শিয়ালি ক্লাউডি’। তাপমাত্রায় কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই—প্রথম সপ্তাহের অর্ধেকে (১৪-২০ নভেম্বর) যা ছিল, তা চলবে।
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে একটা আপার এয়ার সাইক্লোনিক সার্কুলেশন রয়েছে, যা কাশ্মীর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত, কিন্তু এর প্রভাব রাজ্যে নগণ্য। পরবর্তী সপ্তাহে (২৭ নভেম্বর থেকে) তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে, কিন্তু উত্তর ভারতে কুয়াশার সম্ভাবনা বাড়তে পারে, যা উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায় ছড়াতে পারে।
