কলকাতা: শরৎ শেষের দোলায় শীতের প্রথম স্পর্শ এসে পড়েছে বাংলার মাটিতে। আজ, ৯ নভেম্বর ২০২৫, উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের আবহাওয়া কেমন যাবে? ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)-এর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকায় আকাশ পরিষ্কার থাকবে, কিন্তু শুষ্ক বাতাসের কারণে কিছু অঞ্চলে অস্বস্তি বাড়তে পারে।
শীতকালীন সকালের কুয়াশা এখনও ছড়িয়ে আছে, বিশেষ করে উত্তর বঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে, যা যাত্রীদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। দক্ষিণ বঙ্গের কলকাতা ও আশেপাশে দিনের তাপমাত্রা ২২-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, যখন উত্তর বঙ্গে ২২-২৬ ডিগ্রির মামুলি উষ্ণতা থাকবে। আইএমডির কলকাতা অফিস থেকে জানা গেছে, আজ কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, কিন্তু বায়ুমণ্ডলের শুষ্কতা বেড়েছে, যা ত্বক ও শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
নন্দনকাননে দেবীবরণ! বিশ্বজয়ী রিচাকে ‘বিরাট দায়িত্ব’ মুখ্যমন্ত্রীর
উত্তর বঙ্গের কথা বললে, জলপাইগুড়ি, মালদা, দার্জিলিংয়ের মতো জেলাগুলোতে আজকের আবহাওয়া সৌম্য হলেও কুয়াশার ছায়া লেগে আছে। জলপাইগুড়িতে সকালের তাপমাত্রা প্রায় ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কিন্তু আর্দ্রতা ৭১ শতাংশের কাছাকাছি থাকায় বাতাস শান্ত হলেও অস্বস্তিকর লাগবে। মালদায় ২২.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং ৭২ শতাংশ আর্দ্রতা সহ আকাশ মেঘমুক্ত, কিন্তু উত্তর-পশ্চিম বাতাসের হালকা ঝাপটা দিনের শেষে তাপমাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।
দার্জিলিংয়ের মতো উচ্চভূমিতে তথ্য সীমিত হলেও, সাধারণত সকালে কুয়াশা ঘন হয়ে যায়, যা গাড়ি চালকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আইএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪-২৬ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, এবং রাতে নেমে আসবে ১৫-১৮ ডিগ্রি।
বায়ু গতি শান্ত থাকায়, চা বাগানের শ্রমিকরা সকালের কাজে কোনো বাধা পাবেন না, কিন্তু কুয়াশার কারণে পর্যটকরা সতর্ক থাকুন। উত্তর বঙ্গের এই শান্ত আবহাওয়া চাষকৃষ্টদের জন্য সুসংবাদ, কারণ শস্যের ফসল এখন ফলনের মুখে, এবং শুষ্কতা সেগুলোকে সুরক্ষিত রাখবে।
তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী শুষ্কতা নদীগুলোর জলস্তর কমাতে পারে, যা পরবর্তীকালে সমস্যা তৈরি করবে।অন্যদিকে, দক্ষিণ বঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, ডায়মন্ড হারবারের মতো এলাকায় আজকের দিনটি আরও আরামদায়ক কাটবে। কলকাতার আলিপুর অবজারভেটরিতে সকালের তাপমাত্রা ২২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, উত্তর-পশ্চিম বাতাস ১.৯ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে বইছে, এবং আর্দ্রতা ৬৬ শতাংশ।
ডামডামে ২৩.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং ৫২ শতাংশ আর্দ্রতা সহ বাতাসের গতি ৭.৪ কিলোমিটার/ঘণ্টা, যা দিনের বেলায় হালকা শীতলতা আনবে। বাঁকুড়ায় ২০ ডিগ্রি এবং ডায়মন্ড হারবারে ২২ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ আকাশ পরিষ্কার থাকবে, কোনো মেঘের ছায়া নেই। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৩-২৫ ডিগ্রির মধ্যে, রাতে নামবে ১৬-১৯ ডিগ্রি।
শহুরে জীবনযাত্রায় এই আবহাওয়া আনন্দের, কারণ সকালে হাঁটাহাঁটি বা অফিস যাওয়া আরামদায়ক হবে। কিন্তু শুষ্ক বাতাসের কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই জলপান বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। হাওড়া বা হুগলির মতো শিল্পাঞ্চলে কাজকর্মে কোনো বাধা নেই, কিন্তু নদীপাড়ে বসবাসকারীরা কুয়াশার কারণে সতর্ক থাকুন।


