কলকাতা, ১৯ নভেম্বর: শীতের মৃদু স্পর্শে ভেজা এই নভেম্বর মাসে বাংলার আকাশ আজ একই রকম শান্ত ও শুষ্ক (West Bengal weather) থাকবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)। উত্তর বঙ্গের পাহাড়ি ঢাল থেকে শুরু করে দক্ষিণ বঙ্গের নদীমাতৃক সমভূমি সবখানেই মূলত শুষ্ক আবহাওয়ার ছাপ পড়বে। সপ্তাহের প্রথমার্ধে (১৪ থেকে ২০ নভেম্বর) উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গে শুষ্কতার দাপট অব্যাহত থাকবে, যদিও দক্ষিণাঞ্চলে সামান্য উষ্ণতা বাড়তে পারে।
এই পূর্বাভাস শুধু আকাশের কথা নয়, বরং কৃষক, ভ্রমণার্থী আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা জাগিয়েছে। আসুন, বিস্তারিত জেনে নিই আজকের আবহাওয়ার এই শান্ত ছবি।উত্তর বঙ্গের কথা আগে বলি। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, মালদা, উত্তর দিনাজপুর আর দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো জেলাগুলোতে আজ আকাশ মোটামুটি পরিষ্কার থেকে আংশিক মেঘলা রয়েছে।
আইএমডির সাপ্তাহিক পূর্বাভাস অনুসারে, এই অঞ্চলে কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই—সম্পূর্ণ শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সকালে ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরপাক খাবে, যা স্বাভাবিকের কাছাকাছি। দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। বাতাসের গতি হালকা, ৫-১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, দিক উত্তর-পশ্চিম থেকে।
আর্দ্রতার মাত্রা ৬০-৭০ শতাংশের মধ্যে থাকবে, যা ত্বক শুষ্ক করে তুলতে পারে। পাহাড়ি এলাকায়, বিশেষ করে দার্জিলিংয়ে, সকালের কুয়াশা সূর্যোদয়ের পর কেটে যাবে, কিন্তু রাস্তায় যাতায়াতকারীদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কৃষকরা উপকৃত হবেন এই শুষ্কতায়—ধানের শেষ ফসল কাটাইয়ের জন্য আদর্শ সময়। তবে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রভাব বাড়ছে, তাই রাতের দিকে উষ্ণ কাপড়ের প্রয়োজন হতে পারে।এবার দক্ষিণ বঙ্গের দিকে নজর দিন।
কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের মতো জেলাগুলোতে আজকের আবহাওয়া আরও স্বস্তিকর। আইএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সপ্তাহের দ্বিতীয়ার্ধে এখানে সামান্য উষ্ণতা বাড়বে, তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস উর্ধ্বে যাবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮-২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের নিচে ২-৩ ডিগ্রি কম—এটি শীতের আগমনের সংকেত।
দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮-৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে, কলকাতায় দুপুরের সময় রোদে বাইরে বের হলে অস্বস্তি হতে পারে। আকাশ পরিষ্কার থেকে আংশিক মেঘলা, কোনো বৃষ্টির ছায়া নেই। বাতাসের গতি ৮-১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, দিক পূর্ব-উত্তর-পূর্ব থেকে।
আর্দ্রতা ৫৫-৬৫ শতাংশ, যা শহুরে এলাকায় অ্যালার্জির রোগীদের জন্য সতর্কতার কারণ। কলকাতার মতো বড় শহরে যানজট এড়াতে সকাল-সন্ধ্যার সময় বাইরে বের হওয়াই ভালো। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নদীভাঙনের ভয় নেই, কিন্তু উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা ১-১.৫ মিটারের মধ্যে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
