লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতি শনাক্ত হবে নতুন অ্যাপে

উত্তরবঙ্গে হাতিদের (Elephant) অবস্থান ও তথ্য এখন হাতে পাওয়া যাবে একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে। রাজ্যের বন বিভাগ এবং পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া…

উত্তরবঙ্গে হাতিদের (Elephant) অবস্থান ও তথ্য এখন হাতে পাওয়া যাবে একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে। রাজ্যের বন বিভাগ এবং পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া এই পাইলট প্রজেক্টের লক্ষ্য হলো হাতির চলাচল, জনবসতি এলাকায় ঢোকার ঘটনা এবং তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা।

Advertisements

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রেঞ্জের প্রায় ৫০টি হাতির তথ্য ইতিমধ্যেই আপলোড করা হয়েছে। আগামীতেও আরও হাতির তথ্য যুক্ত করা হবে। এছাড়াও বনদপ্তরের রেঞ্জার এবং এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের সদস্যদের জন্য কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে, যাতে তাঁরা অ্যাপটি কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেন।

   

অ্যাপটির পেছনে মূল সংস্থা হলো অশোকা ট্রাস্ট ফর রিসার্চ ইন ইকোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এবং ঐরাবত। ঐরাবতের কোঅর্ডিনেটর অভিযান সাহা বলেন, “উত্তরবঙ্গের কার্শিয়াং বনবিভাগে একাধিক হাতি রয়েছে। অনেক সময় হাতির দল ভারত-নেপাল সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে চলে যায়। তখন কোন হাতি ফেরে, কোন হাতি মারা যায়—এসব তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন ছিল। নতুন অ্যাপের মাধ্যমে এই তথ্য এখন সঠিকভাবে জানা যাবে।”

অ্যাপটি আইডি ও পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে। বন দফতরের র‌্যাপিড রেসপন্স টিম, কুইক রেসপন্স টিম এবং এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের সদস্যরা এটি ব্যবহার করতে পারবেন। প্রত্যেক হাতির জন্য একটি প্রোফাইল তৈরি করা হবে। প্রোফাইলে থাকা তথ্য অনুযায়ী হাতি কোথায় রয়েছে, তার স্বাস্থ্য কী অবস্থা, একা নাকি দলবদ্ধ—এসব তথ্য তৎক্ষণাৎ আপলোড করা যাবে। এতে জনবসতি এলাকায় ঢুকে পড়া হাতির সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে।

বন বিভাগের এডিএফও রাহুল দেব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “পুরনো পদ্ধতিতে সীমান্ত পার হওয়া হাতির তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন ছিল। অ্যাপ চালু হলে হাতি ট্র্যাক করা অনেক সহজ হবে। নেপালের সহযোগিতা পেলে হাতির চলাচলও আরও সঠিকভাবে জানা যাবে।”

অ্যাপের মাধ্যমে হাতির চলাচল ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা হলে নেপালে ঢোকে চোরাশিকারিদের হাত থেকে হাতি রক্ষা করা সম্ভব হবে। এই উদ্যোগ জনবসতি এলাকায় হাতির আগমন নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের সঙ্গে হাতির সংঘর্ষ কমাতে কার্যকর হবে।

বাগডোগরা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের রেঞ্জার মানসকান্তি ঘোষ বলেন, “এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আমাদের কর্মীরা ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এবং ধাপে ধাপে প্রতিটি রেঞ্জের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”

ইতিমধ্যেই অশোকা ট্রাস্ট, সোলা ট্রাস্ট, ইসি মোড এবং ঐরাবত সংস্থা, এবং কার্শিয়াং বনবিভাগের বাগডোগরা, পানিঘাটা ও টুকুরিয়া রেঞ্জের সদস্যরা একাধিক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন। এই উদ্যোগ হাতি সংরক্ষণ এবং মানব-হাতি সংঘর্ষ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।