উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে জলপাইগুড়িতে জোর প্রস্তুতি, চলছে দেয়াল লিখন

অয়ন দে, জলপাইগুড়ি: একুশে জুলাই বিজেপি যুব মোর্চার ডাকে ‘উত্তর কন্যা অভিযান’ (UttarKanya Abhijan) সফল করে তুলতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির শুরুর সুর বাজিয়ে দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা…

অয়ন দে, জলপাইগুড়ি: একুশে জুলাই বিজেপি যুব মোর্চার ডাকে ‘উত্তর কন্যা অভিযান’ (UttarKanya Abhijan) সফল করে তুলতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির শুরুর সুর বাজিয়ে দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা যুব মোর্চা। সোমবার থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় শুরু হয়েছে দেয়াল লিখনের কাজ। হাতে তুলে নেওয়া হয়েছে রঙ-তুলি, লেখা হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান ও দাবির কথা।

Advertisements

জলপাইগুড়ি জেলা যুব মোর্চার সভাপতি পলেন ঘোষ জানিয়েছেন, “এই রাজ্যে বর্তমানে নারী সুরক্ষার বেহাল দশা। নিত্যদিন কোথাও না কোথাও নারী নির্যাতনের খবর সামনে আসছে। যুব সমাজ বেকারত্বে জর্জরিত। শিক্ষিত হয়েও চাকরি পাচ্ছে না রাজ্যের তরুণ প্রজন্ম। এর ফলে এক বড় অংশ মানসিক হতাশায় ডুবে যাচ্ছে এবং অনেকে জড়িয়ে পড়ছে মাদকাসক্তি ও অসামাজিক কার্যকলাপে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমরা ২১ জুলাই উত্তরকন্যা অভিযান ডেকেছি।”

   

তিনি আরও জানান, শুধুই একটি কর্মসূচি নয়, এই অভিযান একপ্রকার প্রতিবাদপথ। যেখানে রাজ্যের বঞ্চিত, বেকার ও নিপীড়িত যুব সমাজের পক্ষে আওয়াজ তুলবে বিজেপির যুব শাখা। জলপাইগুড়ি জেলার প্রতিটি ব্লকে চলছে প্রস্তুতি। দলের তরফে প্রচারপত্র বিলি, মিছিল, ছোট ছোট সভা ও পোস্টারিং ছাড়াও অন্যতম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেয়াল লিখনের উপরে।

এদিন জলপাইগুড়ি শহরের গোসালীর মোড়, বীরপাড়া, নিউটাউন, বিন্নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, রাজগঞ্জ সহ একাধিক এলাকায় দেখা গিয়েছে যুব মোর্চার সদস্যদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেওয়ালে রঙ-তুলি দিয়ে “২১ জুলাই উত্তরকন্যা অভিযান সফল হোক”, “নারী সুরক্ষা চাই”, “বেকার যুবকের চাকরি চাই”, “বাংলার যুব সমাজ জবাব চাই” ইত্যাদি স্লোগান লিখতে।

একদিকে যখন তৃণমূল কংগ্রেস শহিদ দিবসের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, অন্যদিকে বিজেপি যুব মোর্চা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে কোমর বেঁধে নেমেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই অভিযান একদিকে তৃণমূল সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করবে, অন্যদিকে রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপির উপস্থিতি আরও জোরালো করতেই এই উদ্যোগ।

যুব মোর্চার দাবি, তাদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরির উদ্দেশ্যে নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। তবে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি নেতৃত্ব। নিরাপত্তা ও অনুমতির বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়েছে বলে জানান সংগঠনের একাধিক সদস্য।

অর্থাৎ, রাজ্য রাজনীতির পটভূমিতে উত্তর কন্যা অভিযানকে ঘিরে উত্তরের জেলাগুলিতে বিজেপির তরফে স্পষ্ট বার্তা— যুব সমাজ জেগে উঠেছে, আর তারা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকবে না।