অয়ন দে, কোচবিহার: মাথাভাঙ্গা (Mathabhanga) ১ নং ব্লকের জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের নেন্দারপাড় গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। গ্রামের ৪০ বছরেরও বেশি পুরোনো মনসা মন্দিরের চারপাশে একটি বেসরকারি প্লাউড কারখানার মালিক পক্ষ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। গত পনেরো দিন ধরে মন্দিরে প্রবেশের পথ বন্ধ থাকায় বাসিন্দারা ধর্মীয় কাজকর্ম থেকে বঞ্চিত। এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে গতকাল নেন্দারপাড় গ্রামে মন্দিরের প্রবেশপথে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গ্রামবাসীরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মন্দির কমিটি বা স্থানীয়দের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই প্লাউড কারখানার মালিক পক্ষ একতরফাভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে। এছাড়া, গ্রামের প্রবেশপথের রাস্তার উপরেও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বর্ষাকালে এলাকায় সাপের উপদ্রব বাড়ে, যার জন্য অনেকেই মনসা পুজো করেন। কিন্তু মন্দিরে প্রবেশ বন্ধ হওয়ায় ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাসিন্দারা বলছেন, “প্লাউড কারখানার মালিক পক্ষের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। মন্দিরে প্রবেশের অধিকার আমাদের রয়েছে।”
বাসিন্দারা এই বিষয়ে জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি দ্রুত কাঁটাতারের বেড়া সরানো না হয়, তবে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পরেশ চন্দ্র বর্মন জানিয়েছেন, “বাসিন্দাদের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা প্লাউড কারখানার মালিক পক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছি। তবে তারা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এখনও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আসেননি।” তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনা নেন্দারপাড় গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মন্দিরটি গ্রামের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কাঁটাতারের বেড়া শুধু তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনি, বরং গ্রামের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকেও বিঘ্নিত করেছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন, যাতে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং কারখানার মালিক পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বাসিন্দারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আরও বড় আন্দোলনে নামবেন।