উত্তরবঙ্গ, ২৬ অক্টোবর: দার্জিলিং জেলার (North Bengal) দুধিয়ায় অস্থায়ী সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সোমবার থেকেই সেই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে নিজের এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “দুধিয়ায় অস্থায়ী সেতুর নির্মাণ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার থেকেই যান চলাচল শুরু হবে।”
গত মাসের প্রবল বৃষ্টিতে দুধিয়া এলাকার মূল সেতু ভেঙে গিয়ে মিরিক ও শিলিগুড়ির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে পর্যটন, পরিবহন ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াত মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। পাহাড়ের মানুষ যেমন বিপাকে পড়েছিলেন, তেমনি সমস্যায় পড়েন পর্যটক ও ব্যবসায়ীরাও। প্রশাসনের দ্রুত তৎপরতায় সেই যোগাযোগ ফের স্থাপন হল মাত্র ১৬ দিনের মধ্যে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বার্তায় জানান, “৪৬৮ মিটার দীর্ঘ ও ৮ মিটার প্রস্থের এই অস্থায়ী সেতুটি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে ১২০০ মিমি ব্যাসের ১৩২টি হিউম পাইপ। মাত্র ১৬ দিনের রেকর্ড সময়ে এই চ্যালেঞ্জিং কাজটি সম্পন্ন করার জন্য আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পূর্ত দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।” তিনি আরও বলেন, “এই সেতুর মাধ্যমে মিরিক, সুকনা, দার্জিলিং ও আশপাশের এলাকার মানুষদের বড় স্বস্তি মিলবে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, আমরা মানুষের পাশে আছি, বিশেষ করে দুর্যোগের সময়।”
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি আপাতত হালকা ও মাঝারি ভারবাহী গাড়ির জন্য খোলা হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও স্থায়িত্ব পরীক্ষার পর ভারী যান চলাচলের অনুমতিও দেওয়া হতে পারে। সেতুর দুই প্রান্তে রেলিং, নিরাপত্তা গার্ড ও সাইন বোর্ড বসানো হচ্ছে।
পাহাড়ি অঞ্চলের এই ধরনের কাজ সাধারণত সময়সাপেক্ষ। বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় মাটি নরম থাকায় নির্মাণে নানা বাধা আসে। তবু পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার, শ্রমিক ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টায় কাজটি দ্রুত শেষ করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রশাসনের এই উদ্যোগে সন্তুষ্ট। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই সেতু না থাকলে আমরা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম। এখন অন্তত স্কুল, বাজার ও হাসপাতাল যেতে পারব।”
পাশাপাশি, পর্যটকদের মধ্যেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে মিরিক হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা ফের চালু হওয়ায় নভেম্বরের ছুটির মরসুমে পর্যটন ব্যবসায় নতুন গতি আসবে বলে আশাবাদী হোটেল মালিকরা।


