প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্বপ্নের সেবক-রাংপো রেলপথে সিকিম জুড়তে চলছে বলে কেন্দ্রীয় সরকার ফলাও প্রচার করছে। এদিতে সিকিমে রেলপথ বানানো নিয়ে প্রকৃতি বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, যেভাবে পাহাড়ের গায়ে যন্ত্রের আঘাত লাগছে তাতে ভবিষ্যৎ খুব ভয়াবহ। এই বিতর্ক আরও উস্কে গেল রাজ্যপালের মন্তব্যে। তিস্তার হড়পা বানে (teesta flood) সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিচ্ছিন্ন। এমন পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেছেন,উন্নয়নের নামে প্রকৃতির উপরে আক্রমণ করেছি আমরা। তাঁর এমন মন্তব্যে বিজেপি মহলে শোরগোল ফেলেছে। যদিও প্রকৃতি বিশেষজ্ঞ ও ভূবিজ্ঞানী, পরিবেশবিদরা রাজ্যপালের মন্তব্যে সহমত পোষণ করছেন। তাঁরা বলছেন, উত্তরাখণ্ডে বারবার ভয়াবহ বিপর্যয় যে অশনি সংকেত দিচ্ছে তা থেতে শিক্ষা নিয়ে সিকিম সহ পূর্ব ও উত্তর পূর্বের পাহাড়ি এলাকায় পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে যে যান্ত্রিক আঘাত চলছে তা বন্ধ করা দরকার।
সিকিমের লোনাক হ্রদ ফেটে জল নেমেছে। সেই জল ও ভারী বৃষ্টি মিলে তিস্তা নদীতে ভয়াবহ বন্যা। সিকিম বিচ্ছিন্ন। তিস্তার ধাক্রায় সিকিমের সাথে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে দেশের অন্যান্য অংশের মূল সড়ক যোগাযোগ জাতীয় সড়ক ভেঙে চুরমার। সিকিমের লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলাতেও দুর্যোগের প্রভাব পড়েছে। তিস্তার নিম্ন অববাহিকায় উত্তরবঙ্গের দুটি জেলা জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের বিস্তির্ণ অংশে জারি হয়েছে বন্যার চরম সতর্কতা। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ সফরে রাজ্যপাল।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল দার্জিলিং জেলার সেতিঝোরা পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বলেন বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে কথা বলবেন। তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে সংঘাত চলছে। এদিনই রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল নেই শুনে তিনি কটাক্ষ করেছেন। আর রাজ্যপালের কটাক্ষ “হ্যাঁ আমি পর্যটক, লোকেদের অবস্থা দেখতে এসেছি।”
অন্যদিকে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, তিনি রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে বলেন, উত্তর দেওয়ার নেই বলে, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে পালাচ্ছেন। মানুষের হকের টাকা চাইতে গেলে হেনস্থা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, এভাবে আন্দোলন হয়না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বিরোধী, তবে তার মতো আন্দোলন করতে শেখেননি। এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছেন, কারণ রাজ্যপাল সংবেদনশীল। পার্থ ভৌমিক শুধুমাত্র নিজের চাকরি বাঁচাতে এ কথা বলছেন।