উত্তরবঙ্গ, ৭ অক্টোবর: তিব্বতীয় হিমালয় পাদদেশ থেকে নেমে আসা নদীগুলির বেগ সামলাতে না পেরে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের (North Bengal) চা শিল্প। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারণে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন নদীর বাঁধ ভেঙে গিয়ে জল ঢুকেছে চা বাগান অঞ্চলে।
এই ভয়াবহ দুর্যোগের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই জেলার ৫০টিরও বেশি চা বাগান। কোথাও কোথাও চা বাগান সম্পূর্ণভাবে ডুবে গিয়েছে। আবার কিছু এলাকায় জল নামলেও রেখে গিয়েছে পুরু পলির স্তর, যা মাটির উর্বরতা নষ্ট করে গাছের শিকড়ের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত করছে।
চা শিল্প উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ। হাজার হাজার শ্রমিকের জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে এই শিল্পের সঙ্গে। তবে সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতির জেরে যেভাবে একের পর এক চা বাগান ডুবে যাচ্ছে কিংবা পলি জমে বন্ধ হয়ে পড়ছে উৎপাদন, তাতে উদ্বেগে রয়েছেন বাগান মালিক থেকে শুরু করে সাধারণ শ্রমিকরা। অনেক বাগানে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শ্রমিকদের বসবাসের জায়গাতেও জল ঢুকে পড়েছে অনেক এলাকায়।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান, কয়েক কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ইতিমধ্যেই। শুধু গাছ বা জমি নয়, চা প্রক্রিয়াকরণের কারখানাও কিছু এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার জল ঢুকে মেশিন, স্টোরেজ এলাকা নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে।
ক্ষতির অন্যতম কারণ শুধুমাত্র বন্যার জল নয়, বরং সেই জল নামার পর জমে থাকা পলি। নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ বয়ে এনে উত্তরবঙ্গের সমতল চা বাগান এলাকায় পলি আকারে জমা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চা গাছের জন্য এই পলি অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ এতে মাটির স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়। শিকড় গুলি বাতাস ও জলের অভাবে পচে যেতে শুরু করে।