অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) কামাখ্যাগুড়ি সুপারমার্কেট এলাকায় মঙ্গলবার রাতে একটি চলন্ত গাড়িতে হঠাৎ আগুন লাগার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, রাত প্রায় দশটা নাগাদ একটি ছোট গাড়ি কামাখ্যাগুড়ি সুপারমার্কেট হয়ে পারোকাটার দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ গাড়ির ভেতরে ধোঁয়া দেখতে পাওয়ায় চালক দ্রুত গাড়ি থামিয়ে নিরাপদে নেমে পড়েন। তবে, কিছুক্ষণের মধ্যেই গাড়িটিতে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়, যা এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
ঘটনার খবর পেয়ে কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একই সঙ্গে বারোবিশা দমকল কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দমকল বিভাগের একটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল কর্মীদের তৎপরতায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নেভানো সম্ভব হয়। সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কেউ আহত হননি, তবে গাড়িটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এবং দমকল বিভাগের কর্মীরা অনুমান করছেন, গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি, সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে এই আগুন লাগতে পারে। ঘটনার পর গাড়িটিকে তদন্তের জন্য কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে এবং গাড়ির মালিকের বক্তব্য নথিভুক্ত করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ সাহা জানান, “গাড়িতে হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়ায় আমরা সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। চালক দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে না গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।” তিনি আরও বলেন, “দমকল এবং পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের জন্য আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। তবে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে সড়কে নিয়মিত যানবাহন পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকা উচিত।”
কামাখ্যাগুড়ি সুপারমার্কেট এলাকা ব্যস্ত বাণিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ায় রাতের এই ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আগুনের শিখা এবং ধোঁয়া দেখে অনেকেই ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন। কিছু স্থানীয় বাসিন্দা চালকের সঙ্গে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। দমকল বিভাগের এক কর্মী জানান, “আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে খুব বেশি সময় লাগেনি, তবে গাড়ির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে।”
এই ঘটনা কামাখ্যাগুড়ি এলাকায় যানবাহনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুরনো বা ত্রুটিযুক্ত যানবাহনের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তারা দাবি করেছেন, সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের নিয়মিত পরীক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণের উপর জোর দেওয়া উচিত। এছাড়াও, তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত করে এই ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়ির এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। গাড়ির যান্ত্রিক অবস্থা এবং চালকের বক্তব্য পরীক্ষা করে আগুন লাগার কারণ জানার চেষ্টা করছি।” তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় কেউ আহত না হওয়ায় স্বস্তির বিষয়। তবে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
এই ঘটনা কামাখ্যাগুড়ি এলাকায় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, প্রশাসন এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।