Sunday, December 7, 2025
HomeWest BengalNorth Bengalপাহাড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! ঘটনাস্থলে দমকলের ৩টি ইঞ্জিন

পাহাড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! ঘটনাস্থলে দমকলের ৩টি ইঞ্জিন

- Advertisement -

অয়ন দে, দার্জিলিং: দার্জিলিংয়ের কাকঝোরা এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Massive Fire)! বুধবার রাতের এই ঘটনায় গোটা পাহাড়জুড়ে নেমে আসে তীব্র চাঞ্চল্য। উত্তরবঙ্গের শৈলশহরে দার্জিলিং টেরিটোরিয়াল ডিভিশনের অধীন কাকঝোরা রেঞ্জের স্টাফ কোয়ার্টারে হঠাৎ করে এই ভয়ঙ্কর আগুন লাগে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে একটি খালি স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কোয়ার্টারগুলিতে। যেহেতু কোয়ার্টারগুলি অনেক পুরনো এবং কাঠের তৈরি, তাই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ভয়াবহ আকার নেয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মীরা প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালান, কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে থাকে।

   

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দার্জিলিং দমকল কেন্দ্রের তিনটি ইঞ্জিন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টার পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু ততক্ষণে বন বিভাগের অন্তত আটটি স্টাফ কোয়ার্টার সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনের আঘাত থেকে রেহাই পায়নি ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসারের কার্যালয়ও। অফিস ভবনের একাংশ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কেউ হতাহত হয়নি। তবে বন দফতরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও নানান দফতরি সামগ্রী আগুনে পুড়ে গিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও, বন দফতর সূত্রে খবর, ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর।

ঘটনার খবর পেয়েই দার্জিলিং ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশনের আধিকারিক, দার্জিলিং চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ-সহ অন্যান্য বন আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। তবে কীভাবে এই আগুন লাগল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে, কেউ বা সন্দেহ করছেন কোনও নাশকতার কথা।

এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি বলেন, “দার্জিলিংয়ে কাকঝোরা স্টাফ কোয়ার্টারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আটটি কোয়ার্টার সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গিয়েছে। দমকল কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারিত নয়। তবে কীভাবে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হবে।”

এই ঘটনায় পাহাড়ে আবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বনদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কীভাবে এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, তা নিয়েই চিন্তিত বনকর্তারা। এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর।

এই মুহূর্তে গোটা কাকঝোরা রেঞ্জ এলাকায় আতঙ্ক ও উদ্বেগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বনকর্মীরা যাঁরা ওই কোয়ার্টারগুলিতে বসবাস করতেন, তাঁদের অনেকেই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular