পশ্চিমবঙ্গে গণহত্যায় জড়িত (Jibon Singh) জীবন সিংহ। এই কেএলও (KLO) জঙ্গির নামে এখনও আতঙ্কিত হন জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িবাসী। প্রকাশ্যে খুন করা হয়েছিল ৫ বাম নেতাকে। জঙ্গি নেতার বাড়ি আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামে। আসল নাম তামির দাস।
আলাদা কামতাপুর স্বশাসিত এলাকা না হলে পশ্চিমবঙ্গে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব। এমনই হুমকি দেওয়া কেএলও (KLO) প্রধান জীবন সিংহকে কি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হবে? এমনই প্রশ্নে সরগরম রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। মোস্ট ওয়ান্টেড জীবন সিংহর আত্মসমর্পণ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতা রাজনৈতিক মহলেও চর্চার বিষয়। যুক্তি হিসেবে আমলাদের একাংশের দাবি, কেন্দ্র সরকার সরাসরি জীবন সিংহর বিষয়ে কিছুই জানায়নি।
বিচ্ছিন্নতাবাদী কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও) এ রাজ্যে গণহত্যায় জড়িত। ২০০৩ সালের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে কেএলও প্রধান জীবন সিংহের নির্দেশে প্রকাশ্যে ৫ সিপিআইএম নেতা-কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়। ১৩ জন জখম হন। সূত্রের খবর, ধূপগুড়ি হামলায় জড়িত প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি টম অধিকারী দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্র সরকার ও জীবন সিংহের সাথে শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে। ধূপগুড়ি গণহত্যার পর ধৃত টম অধিকারী সহ কয়েকজন তৃ়নমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে জামিন পায়।
কেএলও প্রধান জীবন সিংহ মায়ানমার থেকে ভারতে ঢুকে নাগাল্যান্ডে আত্মসমর্পণ করে বলেই ভিডিও বার্তায় সশস্ত্র সংগঠনটির তরফে জানানো হয়। ভিডিও বার্তা দেয় জঙ্গি নেতা জীবন সিংহর ঘনিষ্ঠ বিশ্বজিত রায়। অসম রাইফেলসের তত্ত্বাবধানে আছে জীবন সিংহ। জানা যাচ্ছে, কেএলও প্রধানের সাথে কেন্দ্র সরকারের শান্তি আলোচনায় অন্যতম ভূমিকা নিচ্ছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি সরাসরি কেন্দ্রীভূত স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার সাথে আলোচনা করেছেন।
আরও জানা যাচ্ছে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ রাজনৈতিক মঞ্চে নামানোর উদ্যোগ নিয়েছে। শিলিগুড়ি ও গুয়াহাটির বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অসম, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের কিছু অংশ কেটে যে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করার কথা বারবার বলছেন বিজেপি নেতারা, সেই অঞ্চলের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবে জীবন সিংহ। তবে সবই হবে শান্তি আলোচনায় চুক্তি সই হবার পরে।
জানা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা হিসেবে দু দশক আত্মগোপনে থাকা জীবন সিংহ রাজনৈতিক মঞ্চে আবির্ভুত হবে। জঙ্গি নেতা অসম বা আলিপুরদুয়ারের কোনও একটি এলাকা থেকে তার নতুন ইনিংস শুরু করতে পারে।
দু দশক আগে পশ্চিমবঙ্গে গণহত্যায় জড়িত জীবন সিংহের একাধিক জঙ্গি শিবির ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল প্রতিবেশি দেশ ভুটান। সেই অপারেশন অল ক্লিয়ার ধাক্কা সামলাতে না পেরে নেপাল, মায়ানমার, বাংলাদেশ, চিনে অন্যান্য কয়েকটি ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠির নেতাদের সাথে আত্মগোপনে ছিল জীবন সিংহ। আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বাসিন্দাদের কাছে জীবন সিংহ পরিচিত তামির দাস নামে। সেখানেই তার বাড়ি।