কাজিরাঙ্গার জেরে গরুমারা জঙ্গলে বাড়ল সতর্কতা, চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার | কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে সম্প্রতি চোরাশিকারিদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার পর গরুমারা জাতীয় উদ্যানে (Gorumara National…

gorumara national park

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার | কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে সম্প্রতি চোরাশিকারিদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার পর গরুমারা জাতীয় উদ্যানে (Gorumara National Park) সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। সূত্রের খবর, কাজিরাঙ্গায় চোরাশিকারিদের অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় তারা গরুমারা বা জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই আশঙ্কার কারণে গরুমারায় বনকর্মী, পুলিশ এবং প্রশিক্ষিত কুকুর ও কুনকি হাতির সহায়তায় নজরদারি ও তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

Read Hindi: काजीरंगा की घटना के बाद Gorumara National Park में बढ़ी सतर्कता, शिकारियों के खिलाफ कड़ा कदम

   

গরুমারা জাতীয় উদ্যানের ডিএফও দ্বিজ প্রতিম সেন জানিয়েছেন, “আমরা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাচ্ছি। বনকর্মী, পুলিশ, প্রশিক্ষিত কুকুর অরল্যান্ডো এবং কুনকি হাতির সাহায্যে গভীর জঙ্গলে তল্লাশি চলছে।” সম্প্রতি গরুমারা সাউথ রেঞ্জের বনকর্মীরা পুলিশ এবং অরল্যান্ডোর সহায়তায় সংলগ্ন বনবস্তিতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে তৎক্ষণাৎ বন দফতর বা পুলিশকে জানাতে।

এডিএফও রাজীব দে জানান, “কুনকি হাতির সাহায্যে গভীর জঙ্গলে পৌঁছে তল্লাশি করা হচ্ছে। কেউ যদি সন্দেহজনক আচরণ করে, তবে তৎক্ষণাৎ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে গরুমারার জিরো বাঁধ এবং রামশাইয়ের চর অঞ্চলে। বন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে এই এলাকা দিয়েই চোরাশিকারিরা প্রবেশ করেছিল এবং গণ্ডার হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিল। গণ্ডার শুধু একটি প্রাণী নয়, উত্তরবঙ্গের গর্ব এবং পরিচয়। এই গর্ব রক্ষায় বনকর্মীরা দিনরাত এক করে কাজ করছেন।

Advertisements

গরুমারা জাতীয় উদ্যানে একশৃঙ্গ গণ্ডার, হাতি, বাঘ এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। চোরাশিকারিরা প্রায়শই গণ্ডারের শিংয়ের জন্য এই অঞ্চলকে টার্গেট করে। কাজিরাঙ্গার ঘটনার পর বন দফতর এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা এই লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বন দফতর বাসিন্দাদের কাছে আবেদন জানিয়েছে, তারা যেন কোনও অস্বাভাবিক কার্যকলাপ দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে জানায়।

এই সতর্কতা শুধু গরুমারার জন্য নয়, জলদাপাড়া এবং অন্যান্য কাছাকাছি বনাঞ্চলেও প্রযোজ্য। বনকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনও এই অভিযানে সক্রিয় অংশ নিচ্ছে। গণ্ডার এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই চোরাশিকারিদের হাত থেকে এই অঞ্চলকে রক্ষা করতে বন দফতর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্থানীয়দের সহযোগিতা এবং কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এই লড়াই জোরদার করা হচ্ছে।