অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার ভক্তিনগর থানা এলাকায় এক নাবালিকার যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অভিযোগ, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক গৃহশিক্ষক অমর দাস সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে টিউশন পড়ানোর নামে যৌন নির্যাতন করেছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ও নির্যাতিতার পরিবার উত্তেজিত হয়ে ওই গৃহশিক্ষকের বাড়িতে চড়াও হয়। পরে ভক্তিনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত অমর দাসকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার তাকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হয়েছে।
Read Hindi: जलपाईगुड़ी में नाबालिग के यौन उत्पीड़न का आरोप, ट्यूशन शिक्षक अमर दास गिरफ्तार
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিতা ওই নাবালিকার পরিবার দেড় বছর আগে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে। স্থানীয়ভাবে অমর দাসের টিউশনের কথা শুনে তারা তাদের মেয়েকে তার কাছে পড়তে পাঠায়। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেলে টিউশনের জন্য ওই নাবালিকা অমর দাসের বাড়িতে যায়। টিউশন শেষে অন্যান্য পড়ুয়াদের ছুটি দেওয়ার পর অমর দাস ওই নাবালিকাকে একা রেখে তার পোশাক খুলে যৌন নির্যাতন চালায়। নির্যাতিতা বাড়ি ফিরে কাঁদতে কাঁদতে পরিবারের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। পরিবারের অভিযোগ, এটিই প্রথম ঘটনা নয়; এর আগেও অমর দাস ওই নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে এবং তাকে মুখ খোলার বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি দিয়েছে।
ঘটনা জানাজানি হতেই নির্যাতিতার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা অমর দাসের বাড়িতে গিয়ে তাকে উত্তম-মধ্যম দেয়। খবর পেয়ে ভক্তিনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অমর দাসকে আটক করে। পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো আইনে মামলা রুজু করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার তাকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে বিচারক মামলার শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
নির্যাতিতার এক আত্মীয় বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম ওই শিক্ষকের কাছে আমাদের মেয়ে নিরাপদে পড়াশোনা করবে। কিন্তু এমন নৃশংস ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি। আমরা কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” স্থানীয় বাসিন্দারাও এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
ভক্তিনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে এবং নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনা জলপাইগুড়ি জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। শিক্ষকের মতো দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তির এমন কাজ সমাজে শিক্ষার প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ণ করছে। স্থানীয়রা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থা এবং সচেতনতার দাবি জানিয়েছেন।