অয়ন দে, শিলিগুড়ি: খেলাধুলা চর্চায় ফের এক নতুন অধ্যায় রচিত হল শিলিগুড়িতে। মঙ্গলবার থেকে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হল মেয়র কাপ ইন্টার স্কুল টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা ২০২৫ (Inter-School Table Tennis)। শিলিগুড়ি পৌর নিগমের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে শহরের ১৯টি স্কুলের প্রায় ১৮০ জন প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রী—বয়েস অ্যান্ড গার্লস বিভাগে।
শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী এবং পৌর নিগমের অন্যান্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ। উদ্বোধনী মঞ্চে ছাত্রছাত্রীদের উচ্ছ্বাস এবং উপস্থিত অভিভাবকদের উত্সাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
মেয়র গৌতম দেব প্রতিযোগী খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বলেন, “এই ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুধু খেলাধুলার মানসিকতা তৈরি করে না, বরং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শৃঙ্খলা, সৌহার্দ্য, আত্মবিশ্বাস ও সহনশীলতা গড়ে তোলে। ভবিষ্যতে আরও বড় মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করার লক্ষ্যে এখান থেকেই শুরু হোক যাত্রা।” তিনি প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে শুভেচ্ছা জানান এবং ভবিষ্যতের জন্য সাফল্য কামনা করেন।
প্রতিযোগিতার প্রথম দিন থেকেই শিলিগুড়ির ইনডোর স্টেডিয়ামে খেলা ঘিরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ছাত্রছাত্রীদের টেবিল টেনিসে পারদর্শিতা, নিখুঁত ফোরহ্যান্ড ও ব্যাকহ্যান্ড শটের দক্ষতা দেখে উপস্থিত দর্শকরা মুগ্ধ হন। গার্লস বিভাগের বেশ কয়েকটি ম্যাচে দেখা যায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, যা পরবর্তী দিনে আরও উত্তেজনা তৈরি করবে বলেই মনে করছেন আয়োজকরা।
স্থানীয় ক্রীড়া বিশ্লেষক অরিন্দম চক্রবর্তীর কথায়, “এই প্রতিযোগিতা শুধু ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রেই নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে এক সুস্থ প্রতিযোগিতা এবং যোগাযোগ গড়ে তোলে। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মানসিক দৃঢ়তা ও একাগ্রতাও তৈরি করে।”
শিলিগুড়ির মতো শহরে এই ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে শহরের ক্রীড়া পরিকাঠামোকে উন্নত করার দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অভিভাবকরাও। পৌর নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতেও আরও বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট—ব্যাডমিন্টন, ক্যারম, দাবা, ফুটবল প্রভৃতি নিয়মিত আয়োজন করা হবে।
এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একদিকে যেমন কিশোর-কিশোরীদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে, তেমনই শহরের ক্রীড়া সংস্কৃতিও আরও মজবুত হচ্ছে। ‘মেয়র কাপ’ টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা নিঃসন্দেহে উত্তরবঙ্গের ক্রীড়াক্ষেত্রে এক মাইলফলক হয়ে থাকবে।