অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার দিনহাটা ২ নং ব্লকের শুকারুর কুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত থরাইখানা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একসময় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এলাকার মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবার একটি নির্ভরযোগ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু আজ তা নামমাত্র একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিন দিন পরিষেবার মান কেবল খারাপই হচ্ছে, তা উন্নতির কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।
Read Hindi: खराब स्वास्थ्य सेवाओं से परेशान हैं स्थानीय लोग
স্থানীয়দের মতে, আগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অপারেশন থিয়েটার, পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স এবং সার্বক্ষণিক পরিষেবা পাওয়া যেত। গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব থেকে শুরু করে জটিল রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা পর্যন্ত সবই এখানে সম্ভব ছিল। কিন্তু বর্তমানে ডাক্তারদের অনিয়মিত উপস্থিতি এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে এলাকার মানুষ সাধারণ অসুস্থতার জন্যও ২৫ কিলোমিটার দূরে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে বাধ্য হচ্ছেন। এই দূরত্ব অতিক্রম করা প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর।
এলাকাবাসী আরও জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেশ কিছু ভবন বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই ভবনগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, যা স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামোর দুর্বলতার প্রমাণ। এছাড়াও, জরুরি অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া একটি বড় সমস্যা। স্থানীয় বাসিন্দা রমেন বর্মন বলেন, “অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছানোর আগেই অনেক সময় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। কখনও কখনও রোগী প্রাণ হারান।”
এলাকার মানুষের আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হলো, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে সমাজবিরোধী কার্যকলাপ বেড়ে গেছে। পরিত্যক্ত ভবনগুলি এখন অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে, যা এলাকার নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী উদয়ন গুহর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা মনে করেন, মন্ত্রীর উদ্যোগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুনরায় আগের মতো উন্নত পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে। একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা চাই আমাদের এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র আবার আগের মতো সক্রিয় হয়ে উঠুক। আমাদের আর দূরে হাসপাতালে ছুটতে হোক না।”
এই বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের কোনও আধিকারিকের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসী আশা করছেন, তাদের সমস্যার কথা প্রশাসনের কানে পৌঁছাবে এবং দ্রুত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থার উন্নতি হবে।