ধর্মীয় উৎসাহ ও ভক্তির আবহে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা শিলিগুড়িতে

অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: গোটা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শুক্রবার শিলিগুড়িতেও মহাধুমধামে পালিত হল প্রভু জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা (Rath Yatra)। শহরের ইসকন মন্দির প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই…

ধর্মীয় উৎসাহ ও ভক্তির আবহে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা শিলিগুড়িতে

অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: গোটা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শুক্রবার শিলিগুড়িতেও মহাধুমধামে পালিত হল প্রভু জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা (Rath Yatra)। শহরের ইসকন মন্দির প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই মহোৎসব সকাল থেকেই জমে ওঠে ধর্মীয় আবহে। প্রথাগত রীতিনীতি মেনেই শুরু হয় রথযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা।

দিনের সূচনা হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং রথপথে ঝাড়ু দেওয়ার মাধ্যমে। এই বিশেষ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। ঐতিহ্য অনুযায়ী, এই ঝাড়ু দেওয়ার মধ্য দিয়েই রথযাত্রার (Rath Yatra) শুভ সূচনা হয়। এরপর ধূপ, ফুল ও ভক্তিমূলক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে শুরু হয় রথের যাত্রা।

   

শুধু শিলিগুড়ি নয়, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, মালবাজার সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় করেন ইসকন মন্দির প্রাঙ্গনে। বহু দূর থেকে আগত ভক্তরা সকাল থেকেই জড়ো হতে শুরু করেন। রথের (Rath Yatra) দড়ি টানার জন্য সবাই উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করেন।

“জয় জগন্নাথ”-এর গর্জন, ঢাক-ঢোলের আওয়াজ, কীর্তনের ধ্বনি এবং ধর্মীয় সংগীতের মাঝে শুরু হয় রথ (Rath Yatra) টানার পর্ব। প্রথমে বলভদ্র, তারপর সুভদ্রা মহারানী এবং শেষে প্রভু জগন্নাথ দেবের রথ মন্দির চত্বর থেকে বেরিয়ে পড়ে। রথের গায়ে সুসজ্জিত ফুল, রঙিন কাপড় এবং আলোকসজ্জা পুরো পরিবেশটাকে করে তোলে আরও মনোমুগ্ধকর।

শহরের প্রধান রাস্তাগুলিতে দিয়ে রথের (Rath Yatra) যাত্রাপথ নির্ধারিত ছিল। পথে পথে ছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও ভিড় নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ইসকনের এক সদস্য বলেন, “রথযাত্রা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভক্তি, মানবতা এবং সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধের বার্তা বহন করে। সকলের অংশগ্রহণে আজকের দিনটি সত্যিই স্মরণীয় হয়ে রইল।”

Advertisements

বিভিন্ন স্থানীয় সাংস্কৃতিক দলগুলির উদ্যোগে পথ পরিবেশনা, ধর্মীয় সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশনা রথযাত্রার আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করে। ছোট থেকে বড়, সকলেই অংশ নেন এই উৎসবে। শহরের নাগরিকদের পাশাপাশি পর্যটকরাও মেতে ওঠেন এই মহোৎসবে।

প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারি ছিল গোটা অনুষ্ঠানে। সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ চালানো হয়। স্থানীয় ট্রাফিক বিভাগও বিশেষ ট্রাফিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যাতে সাধারণ মানুষ কোনও ভোগান্তির শিকার না হন।

দিনভর চলা রথযাত্রার শেষে বিকেলের দিকে রথগুলি নির্ধারিত স্থানে থামানো হয়। আগামী দিনের উল্টো রথের জন্য অপেক্ষা শুরু হয়ে যায় এখনই।

উৎসব শেষে অনেকেই বলেন, “এই ধরনের ধর্মীয় উৎসব আমাদের সমাজে সৌহার্দ্য এবং মানবতার বার্তা বহন করে। প্রতি বছর এরকম সুন্দরভাবে রথযাত্রা পালন হোক, এটাই আমাদের কামনা।”