HomeWest BengalNorth Bengalপুলিশি অভিযানে ধরা পড়ল ১৯,২০০ নেশা ট্যাবলেট সহ যুবক

পুলিশি অভিযানে ধরা পড়ল ১৯,২০০ নেশা ট্যাবলেট সহ যুবক

- Advertisement -

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: ফের বড় সাফল্য পেল আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ। প্রচুর পরিমাণে নেশা ট্যাবলেট সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল ফালাকাটা (Falakata) থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে ফালাকাটার ভুতনিরঘাট এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ১৯,২০০টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত হামিদুল মহম্মদ।

ফালাকাটা থানার আইসি অভিষেক ভট্টাচার্য জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই পুলিশের কাছে খবর আসছিল যে ভুতনিরঘাট এলাকায় অবৈধ নেশাজাতীয় ট্যাবলেটের বড় চালান ঢুকছে। সেই খবরের সত্যতা যাচাই করতে বিশেষ নজরদারি শুরু হয়। গোপন সূত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য হাতে আসতেই সোমবার রাতে পুলিশ অভিযানে নামে। ওই এলাকায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয় এবং তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে বিশাল পরিমাণ নেশার ট্যাবলেট উদ্ধার হয়।

   

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে এই ট্যাবলেটগুলি কোচবিহার থেকে ফালাকাটা আনা হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল এলাকায় অবৈধভাবে বিক্রি করা। এই ধরনের ট্যাবলেট সাধারণত কিশোর-কিশোরী ও যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে আসক্তি সৃষ্টি করে, যা সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত ব্যক্তি একটি বড় নেশা পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।

উদ্ধার হওয়া ট্যাবলেটগুলির বাজারমূল্য কয়েক লক্ষ টাকা বলে অনুমান। বর্তমানে পুলিশ সমস্ত ট্যাবলেট জব্দ করেছে এবং ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়াও, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত মূল সরবরাহকারীদের ধরতে তল্লাশি ও অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতার হওয়া হামিদুল মহম্মদকে আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হয়। আদালতে পুলিশ অভিযুক্তের হেফাজত চেয়ে আবেদন জানিয়েছে, যাতে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে গোটা চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। আইসি অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সকলকে আইনের আওতায় আনতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এলাকার মানুষকে অনুরোধ করছি, এই ধরনের অবৈধ কাজের খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানান।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ফালাকাটা ও আশেপাশের কিছু এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই গোপনে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট ও মাদকদ্রব্যের ব্যবসা চলছে। যদিও পুলিশের তৎপরতায় কয়েকবার বড় চালান ধরা পড়েছে, কিন্তু চক্রের মূল পাণ্ডারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাসিন্দারা পুলিশের এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও এরকম অভিযান চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নেশাজাতীয় ট্যাবলেটের ব্যবহার শুধু শারীরিক ক্ষতি নয়, মানসিক এবং সামাজিক ক্ষতিও ডেকে আনে। পড়াশোনা, চাকরি এবং পারিবারিক জীবনে ভয়ানক প্রভাব ফেলে এই আসক্তি। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই সমস্যার মোকাবিলায় এগিয়ে আসা জরুরি।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হলো যে, সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় অবৈধ নেশাদ্রব্য পাচার রোধে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। পুলিশ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে বড় মাপের যৌথ অভিযান চালিয়ে এই সমস্যার মূল উৎস নির্মূল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular