ফাটাপুকুরে বিদ্ধংসী আগুন, পুড়ে ছাই তিনটি দোকান: দেরিতে দমকল

জলপাইগুড়ি জেলার ফাটাপুকুর এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকান সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। রাত ৮টা নাগাদ জাতীয় সড়কের পাশে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জানা…

Fire Breaks Out at Sack Factory in Howrah's Bankra

জলপাইগুড়ি জেলার ফাটাপুকুর এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকান সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। রাত ৮টা নাগাদ জাতীয় সড়কের পাশে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ওই সময় দোকানগুলো বন্ধ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে একটি দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে দোকানে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের দোকানগুলোতেও। ফলে একটি টায়ারের দোকান, একটি গ্যারাজ এবং একটি কাবাড়ির দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।

খবর পেয়ে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি থেকে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, খবর দেওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর দমকল কর্মীরা পৌঁছায়, যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়। দমকলের দেরিতে পৌঁছানো নিয়ে উত্তেজিত জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

   

এলাকার বাসিন্দা দীপন সরকার ও নরেশ রায় জানান, প্রতি নির্বাচনের সময় ফাটাপুকুরে ফায়ার ব্রিগেড স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, ভোটের পর সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয় না। তাদের মতে, ফাটাপুকুর-বেলাকোবা একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা হওয়ায় এখানে দমকল কেন্দ্র স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।

অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তদন্তের পর অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ফাটাপুকুর এলাকায় দমকল কেন্দ্রের অভাব দীর্ঘদিনের সমস্যা। স্থানীয়রা জানান, নিকটবর্তী দমকল কেন্দ্রগুলি দূরে অবস্থিত হওয়ায় জরুরি পরিস্থিতিতে সময়মতো সেবা পাওয়া যায় না। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়। তারা সরকারের কাছে দ্রুত ফাটাপুকুরে একটি দমকল কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তারা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ফাটাপুকুর এলাকায় দমকল সেবার প্রয়োজনীয়তা ও জরুরি পরিষেবার উন্নয়নের গুরুত্বকে পুনরায় সামনে নিয়ে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা যায় এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হয়।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দমকল বিভাগ ও পুলিশ যৌথভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করছে। তদন্তের পর বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। তবে এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফাটাপুকুরের এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, জরুরি পরিষেবার পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও সময়মতো পরিষেবা নিশ্চিত করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা যায়, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।