আছড়ে পড়েছে মন্থা! কেমন থাকবে বঙ্গের আবহাওয়া

cyclone-mantha-bengal-weather-update

কলকাতা: শরৎকালের শেষ প্রান্তে পৌঁছে বাংলার আকাশ আজকের মতোই মেঘাচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে। বঙ্গোপসাগরের উপর গড়ে ওঠা সাইক্লোন ‘মন্থা ’র প্রভাবে উত্তর এবং দক্ষিণ বঙ্গ উভয় অঞ্চলেই আজ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, এবং কিছু জায়গায় ভারী বর্ষণও হতে পারে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) এই অবস্থা নিয়ে সতর্কবাণী জারি করেছে, যাতে জলাবদ্ধতা, বিদ্যুৎস্ফুলিঙ্গ এবং ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisements

দক্ষিণ বঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলোতে হোয়াওয়া বাতাসের গতি ৩৫-৪৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে, যা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলতে পারে। উত্তর বঙ্গে তুলনামূলক শান্তি থাকলেও, সাইক্লোনের অবশিষ্টাংশ ২৯ অক্টোবর থেকে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়াতে পারে। এই আবহাওয়া পরিস্থিতি শুধুমাত্র দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করছে না, বরং কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

   

১ নভেম্বর থেকে চালু হচ্ছে জিএসটি রেজিস্ট্রেশনের নতুন নিয়ম, জানুন নতুন প্রক্রিয়া

আইএমডির পূর্বাভাস অনুসারে, আজকের দিনটি বাইরে বেরোনোর আগে ছাতা এবং জুতো সঙ্গে রাখুন, কারণ অপ্রত্যাশিত বজ্রপাতের ঝুঁকিও রয়েছে।দক্ষিণ বঙ্গের কথা আগে বলি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের মতো জেলাগুলোতে আজ সকাল থেকে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আইএমডির কলকাতা আঞ্চলিক কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সাইক্লোনের বাইরের বন্ধগুলো উত্তর দিকে প্রসারিত হওয়ায় এই অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন ভারী বর্ষণও হতে পারে। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২২-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, যা স্বাভাবিকের কাছাকাছি। কিন্তু আর্দ্রতার মাত্রা ৮০-৯০ শতাংশের কাছাকাছি থাকায় বাইরে থাকলে উঠোনে অস্বস্তি হতে পারে।

কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রের অবস্থা রাফ থাকবে, এবং ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।” এই অঞ্চলে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বেশি, বিশেষ করে কলকাতার নিম্নাঞ্চলীয় এলাকায় যেমন বেলেঘাটা, টালিগঞ্জ বা সল্টলেক।

Advertisements

স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে পাম্প সেট চালু করার নির্দেশ দিয়েছে, এবং ট্রাফিক পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে বৃষ্টির কারণে সড়ক জ্যাম না হয়। কৃষকদের জন্যও সতর্কতা—পাকা ফসল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাটাই করে গুদামে রাখুন, কারণ বজ্রপাতে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।উত্তর বঙ্গের আবহাওয়া আজ তুলনামূলক শান্ত থাকলেও, সাইক্লোনের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়।

জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদার মতো জেলাগুলোতে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, এবং ২৯ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এটি ভারী হতে পারে। দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে আজ সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা, যা পর্বতমালার পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

আইএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, “উত্তর বঙ্গে ২৯ অক্টোবর থেকে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়বে, এবং বিদ্যুৎস্ফুলিঙ্গের সঙ্গে বজ্রপাত হতে পারে।” তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬-২৮ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ১৮-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, যা শরতের শেষের ছোঁয়া বহন করছে।

চা বাগানের কৃষকরা উদ্বিগ্ন—অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পাতার ক্ষতি হতে পারে, এবং সুন্দরবনের মতো সংলগ্ন এলাকায় বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। স্থানীয় প্রশাসন ময়নাগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং কোচবিহারে সতর্কতা জারি করেছে, যাতে লোকজন গাছতলায় আশ্রয় না নেয় এবং বিদ্যুতের খুঁটির কাছে না যায়।