সাংসদকে খুঁজতে এখন যেতে হবে ইংল্যান্ড? বহরমপুরের ইউসুফের নতুন খেলা শুরু!

লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের সম্ভবত সবথেকে বড় চমক ছিল ইউসুফ পাঠান (Berhampore)। তবে অধীরের দুর্ভেদ্য গড় বহরমপুরের (Berhampore) মাটিতে ঘাসফুল যে এভাবে ফুটবে তা…

লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের সম্ভবত সবথেকে বড় চমক ছিল ইউসুফ পাঠান (Berhampore)। তবে অধীরের দুর্ভেদ্য গড় বহরমপুরের (Berhampore) মাটিতে ঘাসফুল যে এভাবে ফুটবে তা হয়তো অনেকে আন্দাজ করেনি। গণনার দিনও একটা সময় অব্দি এগিয়েছিলেন অধীরই।

শহরাঞ্চলে অধীরের গড় মোটের ওপর অটুট থাকলেও যত গ্রামাঞ্চলের দিকে গণনা এগিয়েছে ততই ঘাসফুলের মাটি শক্ত হয়েছে। অবশেষে মিলেছে বহুকাঙ্খিত জয়। জীবনের প্রথম নির্বাচনী যুদ্ধেই জয় পেয়েছেন ইউসুফ। কিন্তু তারপরে যাদের জন্য এই জয় তাদের সাথে নাকি দেখাই করেনি তিনি।

   

সাম্প্রতিক সময়ে নিজের শহর গুজরাতের বরোদায় একটি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন ইউসুফ। কিন্তু এবার বহরমপুর (Berhampore) নিয়েও বিতর্কের আঁচ পাঠানকে ঘিরে। কংগ্রেস থেকে বিজেপি প্রত্যেকেই বহিরাগত তত্ত্বেই তৃণমূলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিল। আদতে গুজরাতের বাসিন্দা ইউসুফ কী করে বাংলার বহরমপুরকে বুঝবেন বা কাজ করবেন? বারংবার প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। কিন্তু ভোট শেষে দেখা গেল বহরমপুরের জনগণের ভরসা বরোদার পাঠানেই।

লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ! ৫ হেভিওয়েট নেতাকে বিরাট শাস্তি দিল তৃণমূল

কিন্তু জয়ের পর একবারও বহরমপুরে না এসে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে খেলে বেড়াচ্ছেন ইউসুফ। ইংল্যান্ড যাওয়ার আগেই সংসদে গিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন। ‘জয় বাংলার’ সাথে ‘জয় গুজরাট’ স্লোগানও তুলেছেন। কিন্তু তারপরেই সটান দেশ ছাড়া। একেবারে ইংল্যান্ডে গিয়ে নিজের ভাইয়ের সাথে খেলে বেড়াচ্ছেন তিনি।

গত ৩রা জুলাই থেকে ১৩ই জুলাই পর্যন্ত ঠাসা ম্যাচ রয়েছে ইউসুফের। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস নামের এই ক্রিকেট লীগে খেলছেন বিভিন্ন দেশের আরও অনেক নামকরা প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। ভারত থেকে যুবরাজ সিং, হরভজন সিং-এর মত কিংবদন্তি তারকারাও খেলছেন।

কিন্তু বহরমপুরে না এসে সোজা ব্রিটেনে গিয়ে ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই আসরে নেমেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকারের সাফাই -“সাংসদের বাড়ি এখানে নয়। তাঁর এটা সংসদীয় এলাকা। উনি জেতার পরই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বাড়ি গিয়ে দেখা পরিবারের সাথে করতে। তখন তিনি তাঁর পরিবারের কাছে গিয়েছেন। এখানে কাজ সামলাবার জন্য তাহেরদা রয়েছেন। উনি শুধু সাংসদ নয় ক্রিকেটারও। খেলা শেষ হলে উনি ফিরে আসবেন। ২২ তারিখ আবারও লোকসভায় অংশগ্রহণ করবেন। ওনার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত কথা হয়”।

যদিও বহরমপুরে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ে তোলার ব্যাপারে আশাবাদী সদ্য নির্বাচিত সাংসদ ইউসুফ। খেলাধুলাতে কেরিয়ার করতে বহরমপুরের তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে চান পাঠান। ইউসুফের নিজের বক্তব্য যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর এ ব্যাপারে কথাবার্তাও হয়েছে।

রায়গঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থীর কৌশলে ঘুম উড়েছে তৃণমূল-বিজেপির!

কিন্তু কাজ ছেড়ে শুধু খেলা নিয়েই মেতে থাকলে প্রশাসনিক কাজকর্ম কী ঠিকঠাক মতন চলবে? নিজের এলাকায় না এলে এলাকার মানুষজন সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে কোথায় যাবেন? এখন থেকেই তীব্র আক্রমণে বিরোধীরা। কিন্তু ক্রিকেটার ইউসুফের এই ক্রিকেট প্রীতিই বহরমপুরের রাজনীতির খেলা পাল্টে দেবে কী? সেটাই এখন দেখার বিষয়।