হুগলি জেলা থেকে কলকাতার সল্টলেক সেক্টর ফাইভের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হলে এতদিন পর্যন্ত যাত্রীদের নির্ভর করতে হতো ট্রেন বা শাটল পরিষেবার উপর। তবে আজ, সোমবার থেকে সেই ছবিতে পরিবর্তন আসছে। শেওড়াফুলি থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত রুটে চালু হচ্ছে নতুন এসি বাস পরিষেবা (New AC Bus Route)।
এই বাস চলবে সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সূত্র অনুযায়ী, আপাতত দিনে পাঁচটি এসি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। হুগলির শেওড়াফুলি থেকে সকাল ৭টা নাগাদ প্রথম বাস ছাড়বে এবং সল্টলেক থেকে শেওড়াফুলির উদ্দেশ্যে শেষ বাস ছাড়বে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে।
এই সিদ্ধান্তে খুশি বাস মালিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, জেলার মধ্যে যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা অনেকটাই কাটবে এই রুট চালুর ফলে।
শুধু শেওড়াফুলি রুটই নয়, এর পাশাপাশি আরও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছেন বেসরকারি বাস মালিকেরা। শ্রীরামপুর থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ (রুট নম্বর ২৮৫) রুটে আরও পাঁচটি নতুন বাস চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই রুটে ১৫টি বাস চলাচল করছে, আর ৩ নম্বর রুটে রয়েছে একটি বাস। নতুন পাঁচটি বাস নামলে এবং শেওড়াফুলি–সেক্টর ফাইভ রুটের পাঁচটি নতুন এসি বাস মিলিয়ে হুগলি জেলা থেকে সল্টলেকগামী বাসের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৬-এ।
বাসমালিক সৌরভ দত্ত জানিয়েছেন, “রুটটি প্রথমে শ্রীরামপুর থেকে করার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে যাত্রী চাহিদার কথা মাথায় রেখে শেওড়াফুলি পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়।”
নতুন রুট অনুযায়ী, বাসগুলি শেওড়াফুলির সুষমা সিনেমা হলের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করবে। এরপর বাসগুলি যাবে শ্রীরামপুর, রিষড়া, কোন্নগর, উত্তরপাড়া, বালিখাল, দক্ষিণেশ্বর, ডানলপ, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বিমানবন্দর, চিনার পার্ক, ইকো পার্ক, ইকো স্পেস এবং নিউটাউন হয়ে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত।
এই পরিষেবার শুরু হওয়া প্রসঙ্গে অনিকেত বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি কলকাতা বাস–ও–পিডিয়া নামক একটি সচেতনতামূলক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য, বলেন, “হুগলি থেকে সেক্টর ফাইভগামী যাত্রীর সংখ্যা অনেক। তাঁদের অনেকেই বালি থেকে শাটল ট্যাক্সি ধরতে বাধ্য হন। নতুন এসি পরিষেবা এই যাত্রীদের জন্য যথেষ্ট স্বস্তির হতে পারে। পাশাপাশি প্রশাসনের উচিত আরও নতুন রুট চালু করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।”
বর্তমানে কলকাতা ও জেলার অনেক বাসরুট যাত্রীর অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শেওড়াফুলি–সল্টলেক রুটে নতুন এসি পরিষেবা চালু হওয়া এক দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা।
এই নতুন রুট যাত্রীদের যেমন আরামদায়ক যাত্রার অভিজ্ঞতা দেবে, তেমনি হুগলি জেলার বাস মালিক ও কর্মচারীদের কর্মসংস্থানের দিক থেকেও এক ইতিবাচক বার্তা এনে দেবে।